প্রিয় মুসলিম ভাই ও বোনেরা আপনাদের জন্য আজকে আমরা নিয়ে এসেছি এশার নামাজ পড়ার নিয়ম এবং এশার নামাজের সময়সূচী সম্পর্কে। আপনারা জানতে পারবেন এশার নামাজ পড়ার ফজিলত সহ, Isha Namaz Time গুরুত্বপূর্ণ সকল বিষয়গুলো।
নামাজ যার আরবি শব্দ হচ্ছে সালাত। এই সালাত হচ্ছে জান্নাতের চাবি। অর্থাৎ নামাজ ব্যতীত জান্নাতে প্রবেশ করা যাবে না। প্রত্যেক মুসলমানের উপর দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ মহান আল্লাহ তাআলা ফরজ করে দিয়েছেন এবং নামাজ আদায় করার জন্য জোরদার করেছেন। আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু সালাম নামাজ আদায়ের জন্য বারবার উম্মতদেরকে দিকনির্দেশনা দিয়েছেন।
নামাজ ছাড়া বেহেশতের কথা চিন্তা করা যায় না। মৃত্যুর পর পরকালে সর্বপ্রথম মহান আল্লাহতালা নামাজের হিসাব নিবে বান্দাদের থেকে। একজন মুসলিম যতই অসুস্থ থাকুক তার আমার যা আদায় করতে হবে। যেমন কেউ যদি দাঁড়িয়ে নামাজ পড়তে অসুবিধা বোধ করে তাহলে থেকে বসে নামাজ পড়তে হবে। আর যদি বসেন নামাজ পড়তে অসুস্থ বোধ করে তাহলে শুয়ে শুয়ে ইশারার মাধ্যমে নামাজ পড়তে হবে। তবুও তাদেরকে নামাজ আদায় করতে বলা হয়েছে। মাত্র মেয়েদের ক্ষেত্রে বিশেষ কয়েকদিনে ছাড় রয়েছে আর বাকি দিনগুলোতে অবশ্যই তাদেরকে সালাত আদায় করতে হবে। সুতরাং আমরা নামাজের বিষয়ে আরো সতর্ক হবো এবং নিয়মিত নামাজ আদায় করব।
এশার নামাজ পড়ার নিয়ম এবং সময়সূচী
প্রত্যেক জিনিসেরই যেমন নির্দিষ্ট নিয়ম-কানুন রয়েছে ঠিক তেমনভাবে নামাজের ক্ষেত্রেও নিয়ম কানুন রয়েছে। যদি নির্দিষ্ট নিয়মে সালাত আদায় না করা হয় তাহলে তার নামাজ কবুল হবে না। আর যারা নির্দিষ্ট নিয়মে নামাজ পড়তে জানে না তাদেরকে অবশ্যই নামাজ পড়তে হবে তবে পাশাপাশি সকল নিয়ম কানুন শিখতে হবে। এখন আমরা জানবো এশারের নামাজ কিভাবে পড়তে হয় সে সম্পর্কে।
যেকোনো নামাজের পূর্বে অবশ্যই ওযু করে নিতে হবে এবং পাক-পবিত্র পোশাক পড়ে নিতে হবে। এশার নামাজ ফরজ চার রাকাত সুন্নত দুই রাকাত। আর কেউ নফল নামাজ আদায় করলে নফল নামাজ পড়তে হবে। এরপর জায়নামাজে দাঁড়িয়ে নামাজের নিয়ত পড়তে হবে। এশার নামাজ পড়ার আরবি নিয়ত হচ্ছে “নাওয়াইত ুআন্ উসাল্লিয়া লিল্লা-হি তাআলা আরবাআ রাকয়াতি এশায়ি ফারজুল্লা-হি তায়ালা মুতাওয়াজজিহান ইলা জিহাতিল কাবাতিশ শারীফাতি আল্লাহু আকবার।” এরপর হাত বেঁধে সানা পড়তে হবে এবং সুরা ফাতেহার সঙ্গে আরেকটি সূরা মিলিয়ে পড়তে হবে। দুটি সুরা পাঠ শেষে আল্লাহু আকবার বলে রুকুতে যেতে হবে এবং সেখানে সুবাহানাল্লাহ রাব্বিয়াল আজিম বলতে হবে তিনবার। এরপর সামিয়াল্লাহু লিমান হামিদাহ বলে সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে আল্লাহু আকবার বলে দুইবার সেজদা করতে হবে। প্রতি সিজদাতে সুবহানা রাব্বিয়াল আলা বলতে হবে তিনবার করে। তারপর আবার সোজা হয়ে দাঁড়াতে হবে। এশার নামাজ পড়ার নিয়ম জানার ক্ষেত্রে খুব সতর্ক থাকতে হবে।
দ্বিতীয় রাকাতে প্রথম রাকাতের মত সুরা পাঠ করতে হবে এবং যথাক্রমে রুকু সিজদা করতে হবে। সিজদার পর বৈঠকে বসতে হবে এবং সেখানে আত্তাহিয়াতু, দরুদ এবং দোয়া মাসুরা পড়তে হবে। তারপর আবার সোজা হয়ে দাঁড়াতে হবে। তারপর আবার প্রথম এবং দ্বিতীয় রাকাতের মত পর্যায়ক্রমে নামাজ শেষ করে চতুর্থ ঢাকাতে বৈঠকে বসে সালাম ফেরাতে হবে। তাহলে এশারের নামাজ স্বয়ংসম্পূর্ণভাবে শেষ হবে।
Read More: যাকাত কি? যাকাতের পরিমাণ
এশার দুই রাকাত সুন্নত নামাজের নিয়ত হচ্ছে “নাওয়াইতু আন্ উসাল্লিয়া লিল্লা-হি তাআলা রাকায়াতি সালাতিল এশায়ি সুন্নাতু রাসুূলিল্লা-হি তাআলা মুতাওয়াজজিহান ইলা জিহাতিল কাবাতিশ শারীফাতি আল্লাহু আকবার।” এরপর উপরের নিয়মে প্রথম দুই রাকাত নামাজ আদায়ের নিয়মে নামাজ আদায় করতে হবে এবং দ্বিতীয় রাকাতের বৈঠক শেষে সালাম ফেরাতে হবে। তাহলে দুই রাকাত সুন্নত নামাজ আদায় হয়ে যাবে।
এছাড়াও এশার নামাজের শেষে বিতর নামাজ আদায় করতে হয়। এই নামাজ কিভাবে পড়তে হয় এবং কখন পড়তে হয় সে বিষয়ে একটি আর্টিকেলের মাধ্যমে আপনাদেরকে বিস্তারিত জানিয়ে দেওয়া হবে। আর হ্যাঁ আমাদের ওয়েবসাইটে ইতিমধ্যে ফজর, যোহর, আসর, এবং মাগরিব নামাজ নিয়ে বিস্তারিত সকল তথ্য দেওয়া রয়েছে।
এশার নামাজের সময়সূচী | Isha Namaz Time
উপরে আপনারা জানলেন এশার নামাজ পড়ার নিয়ম সম্পর্কে। এখন আপনারা জানবেন এশার নামাজ পড়ার সময় সম্পর্কে। অর্থাৎ এশার নামাজ কখন পড়তে হয় এবং কোন সময় পর্যন্ত এশার নামাজের সময় থাকে তা সম্পর্কে। সূর্য যখন অস্ত যায় এবং চারদিকে অন্ধকারাচ্ছন্ন হয় তখন থেকে এশার নামাজের ওয়াক্ত শুরু হয়ে থাকে। আর এশার নামাজের ওয়াক্ত শেষ হয় সুবহে সাদিক পর্যন্ত। অর্থাৎ সুবহে সাদিক পর্যন্ত একজন ব্যক্তি এশার নামাজ পড়তে পারবেন।
আজকের আর্টিকেলে আপনারা জানলেন এশার নামাজ পড়ার নিয়ম এবং এশার নামাজের সময়সূচী। আরো ইসলামিক বিভিন্ন ধরনের তথ্যগুলো জানতে আমাদের সাথে থাকুন।
Also Read: তারাবির নামাজের নিয়ম