ফজরের নামাজ পড়ার নিয়ম ও ফজরের নামাজ কয় রাকাত? নমাজ একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। দৈনিক আমরা পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ি। আল্লাহর নৈকট্য লাভের অন্যতম মাধ্যম নামাজ। ফজর, জোহর, আসর, মাগরিব ও ঈশা। ফজরের নমাজ কত রাকাত? ফজরেরর নামাজ পড়ার নিয়ম কি? অনেকে জানেন না। আমরা আজ ফজরের নামাজের রাকাত সংখ্যা ও পড়ার নিয়ম আলোচনা করব।
কিভাবে ফজরের নামাজ পড়বেন?
ফজরের নামাজ কিভাবে পড়বেন তা জানার আগে ফজরের নামাজের কয়ভাগ রয়েছে সেটা জানা প্রয়োজন। ফজরের নামাজ দুই ভাগে বিভক্ত। সুন্নত ও ফরজ।
ফজরের নামাজ কয় রাকাত?
নামাজ একটি ফরজ ইবাদত। নামাজ অবশ্যই আদায় করতে হয়। আর দিন শুরু হয় ফজরের নামাজ দিয়ে। ফজরের নামাজের নিয়ম জানার আগে, ফজরের রকাত সংখ্যা কত? চলুন জেনে নেই।
ফজরের নামজ চার রাকাত। এই চার রাকাত আবার দুই ভাগে বিভক্ত। ফজরের সুন্নত ও ফজরের ফরজ। ফজরের সুন্নত দুই রাকাত। আর ফজরের সুন্নতের মতন ফজরের ফরজও দুই রাকাত। এই দুই দুই মিলে ফজরের নামজ মোট চার রাকাত।
ফজরের নামাজের সময়।
ফজরের নামজের সময় কখন। এ নিয়ে অনেক কথা আছে। তবে ফজরের নামাজের সঠিক সময় হল। অর্থাৎ ফজরের সময় শুরু হয় সুবহে সাদিকের পর থেকে। আর ফজরের নামজের শেষ সময় সূর্যোদয়ের পূর্বক্ষণ পর্যন্ত। এ সময়ের মধ্যে ফজরের নামজ আদায় করতে হয়। সুবহে সাদিকের আগে পড়লে ফজরের নমাজ হবে না। আর সূর্যোদয়ের পরে পড়লে নামাজ কাযা হবে।
আসর নামাজ কয় রাকাত ও আসরের নামাজ পড়ার নিয়ম?
যোহরের নামাজ পড়ার নিয়ম ও যোহরের নামাজ কয় রাকাত?
ফজরের নামাজ পড়ার নিয়ম।
কিভাবে ফজরের নামজ পড়তে হয়? ফজরের নামাজ পড়ার নিয়ম হলো প্রথমে ফজরের সুন্নত পড়তে হয়।
ফজরের দুই রাকাত সুন্নত পড়ার নিয়ম।
ফজরের নামজ চার রাকাত। প্রথমে সুন্নত দুই রাকাত পড়তে হয়।
- প্রথমে আপনি ফজরের নামজে সুন্নত দুই রাকাতের নিয়ত করে কিবলামুখী দাড়াবেন।
- তাকবীরে তাহরিমা আল্লাহু আকবার বলে কান বরাবর হাত তুলে, তারপর নাভির নিচে হাত বাঁধবেন।
- সানা পড়বেন।
- সুরা ফাতিহা পড়ে অন্য সুরা পড়বেন। রুকু ও সিজদাহ করে দাড়াবেন।
- আবার সুরা ফাতিহা ও অন্যা সুরা বা আয়াত পড়ে রুকু ও সিজদাহ করবেন।
- শেষ বৈঠকে বসে তাশাহ্হুদ, দরুদ ও দোয়ে মাছুরা পড়ে সালাম ফিরাবেন।
ফজরের দুই রাকাত ফরজ নামাজ পড়ার নিয়ম।
ফজরের ফরজ নামাজ দুই রাকাত। সুন্নত দুই রাকাত পড়ে ফরজ পড়তে হয়। জামাতের সাথে ফজরের ফরজ পড়লে আল্লাহু আকবার বলে দাড়াবেন। ছানা পড়বেন। রুকুতে সুবহানা রাব্বিয়াল আজিম তিন বার। আর সিজদায় সুবাহানা রাব্বিয়াল আলা ১ম সিজদায় তিন বার। আর দ্বিতীয় সিজদায় পাঁচ বার পড়বেন। শেষ বৈঠকে তাশাহ্হুদ, দরুদ ও দোয়া পড়ে ইমাম সাহেবপরর সাথে সালাম ফিরাবেন।
আর একাকি নামাজ পড়লে।
- প্রথমে ফজরের নিয়ত করবেন।
- সানা পড়ে সুরা ফাতিহা অন্যা সুরা পড়বেন।
- রুকু সিজদা করে আবার সুরা ফাতিহা ও অন্যা সুরা পরবেন।
- শেষ বৈঠকে তাশাহ্হুদ, দরুদ ও দোয়া পড়ে সালাম ফিরাবেন।
মহিলাদের ফজরের নামাজ পড়ার নিয়ম।
মহিলা ও পুরুষের নামাজ এক। অর্থাৎ রাকাত সংখ্যা সমান। তবে নামাজের নিয়ম কানুনে কিছু পরিবর্তন আছে। পুরুষরা ফজরের নামাজ মসজিদে ফরজ আদায় করে। কিন্তু মহিলা বাসায় পড়ে। আর মহিলার হাত বাধে বুকে। পুরুষরা বাধে নাভির নিচে। আর বৈঠকে পা ছড়িয়ে মহিলাদের বসতে হয়। তাছারা বাকি ফজরের সুন্নত ও ফরজ পুরুষের মতনই।
ফজরের নামাজের নিয়ত।
ফজরের নামাজের নিয়ত বাংলার করলেই হবে। ফজরের নামাজের বাংলা নিয়ত
“আমি কিবলামুখী হয়ে ফজরের ফরজ দুই রাকাত নামাজ ইমামে পিছনে পড়ছি”।
আর ফজরের আরবি নিয়ত হল,
“নাওয়াতু আন উসাল্লিয়া লিল্লাহি তায়ালা রাকআতাই ফরজি ফরদ্বুল্লাহি তায়ালা ইক্বতাদাইতু বি হাজাল ইমামি মুতাওয়াজ্জিহান ইলা কাআবাতিশ শাফিফাতে”
নামাজের সানা।
সুবহানাক আল্লাহুম্মা ওয়া বিহামদিকা তাবারাকাস মুকা ওয়া তায়লা যাদ্দুকা।
ফজরের কাজা নামাজ পড়ার নিয়ম।
কোন নামাজ অনিচ্ছাকৃত বা ভুলবশত ছুটে গিয়ে নামাজের ওয়াক্ত চলে গেলে সে নামাজকে কাজা নামাজ বলে।
ফরজ নামাজ কাজা হলে তা কাজা আদায় করা ফরজ। আর ওয়াজিব নামাজ কাজা হলে তা আদায় করা ওয়াজিব। আর সুন্নত নমাজ কাজা হলে আদায় করতে হয় না। করলে ভালো।
ফজরের নমাজের শেষ সময় হলো সূর্যোদয় পর্যন্ত। এখন কেউ যদি সূর্যোদয়ের পূর্বে ফজরের নামাজ আদায় না করে, তার ফজরের নামাজ কাযা হবে।
ফজরের কাযা নামাজ আদায় করার নিয়ম হলো।
সূর্যোদয়ের ১৫ মিনিট পড়ে নামাজ পড়বে।
নিয়ত করবে আমি ফজরের কাজা নামাজ আদায় করছি।
ফজরের সুন্নত আগে না ফরজ।
ফজরের সুন্নত আগে পড়তে হয়। তরপর ফরজ পড়তে হয়। যদি জামাতে নামাজ পড়তে যান, আর দেখেন সুন্নত পড়তে গেলে জামাত ছুটে যাবে তাহলে পড়ে সুন্নত পড়লে হবে। তবে সূর্যোদয়ের পরে পরতে হয়। আর জামাত ছুটে যাবার আশংকা না থাকলে পড়ে নিবেন।