মোবাইল ব্যাংকিং আলোচনায় আজকের বিষয় হচ্ছে মোবাইলে বিকাশ একাউন্ট খোলার নিয়ম। গত আর্টিকেলে আমরা জেনেছি কিভাবে মোবাইলে নগদ একাউন্ট খোলা যায়। এই আর্টিকেলের নিচের অংশে তা দেওয়া আছে।
বাংলাদেশের যতগুলো মোবাইল ব্যাংকিং রয়েছে তার মধ্যে শীর্ষ এবং জনপ্রিয় স্থানে অবস্থান করছে বিকাশ। প্রতিদিন এর গ্রাহকের সংখ্যা ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। খুব সহজেই এর একাউন্ট খোলা যায় এবং টাকা লেনদেন করা যায়। বিকাশ অ্যাপ এর মাধ্যমে নানা ধরনের ফিচার উপভোগ করা যায়। তাহলে দেরি না করে কিভাবে বিকাশ একাউন্ট খোলা যায় জেনে নেই।
আজকের আর্টিকেলে আমরা যা যা জানবো
- কিভাবে ঘরে বসে বিকাশ একাউন্ট খুলতে হয়
- বিকাশ একাউন্ট ব্যবহারের সুবিধা
- বিকাশের গুরুত্বপূর্ণ কিছু ফিচার
একাউন্ট খোলার নিয়মের পূর্বে আমরা প্রথমে বিকাশ সম্পর্কে একটি জেনে নেই। বিকাশ হচ্ছে এক ধরনের ইলেকট্রিক মানি ট্রানজেকশন ব্যাংকিং পদ্ধতি। এ ব্যাংক ব্রাকের অন্তর্ভুক্ত। ২০১১ সাল এ ব্যাংকিং সেবা চালু হয়। খুব দ্রুত গ্রাহকদের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।
মোবাইলে বিকাশ একাউন্ট খোলার নিয়ম
প্রথমে আমরা জানবো বিকাশ একাউন্ট খোলার জন্য কি কি প্রয়োজন হয়। সঠিক কাগজপত্র না থাকলে বিকাশ একাউন্ট খোলা সম্ভব হবে না। নিচে প্রয়োজনীয় তথ্য তুলে ধরা হলো:
- একটি সচল মোবাইল নম্বর
- ইন্টারনেট কানেকশনযুক্ত মোবাইল ডিভাইস
- বিকাশ অ্যাপ
- জাতীয় পরিচয়পত্র
- যে ব্যক্তির জাতীয় পরিচয় পত্র সে ব্যক্তির ভেরিফিকেশন
উপরের বিষয়গুলো থাকলেই ঘরে বসেই খুব সহজে বিকাশ একাউন্ট খোলা যায়। কিভাবে বিকাশ একাউন্ট খুলবেন তা নিচে দেওয়া হল।
১. প্রথমে একটি ইন্টারনেট সংযুক্ত মোবাইল ডিভাইস দিন। তারপর প্লে স্টোরে গিয়ে সার্চ করুন “Bkash App” লিখে।
২. সার্চ করার পর প্রথমেই বিকাশ অ্যাপ আসবে। এরপর ইন্সটল করে ওপেন করতে হবে।
৩. বিকাশ অ্যাপ ওপেন করার পর রেজিস্টার করুন নামের একটি অপশন দেখতে পারবেন পারবেন। এই অপশনটিতে ক্লিক করুন।
৩. পরবর্তী ধাপে মোবাইল নম্বর প্রবেশ করাতে হবে। সেখানে এমন একটি নাম্বার দিতে হবে যেটি দিয়ে ইতিপূর্বে বিকাশ একাউন্ট খোলা হয়নি। নাম্বার বসানোর পর কোন অপারেটর দিয়ে একাউন্ট খুলতে চাচ্ছেন তা সিলেক্ট করে পরবর্তী ধাপে যেতে হবে।
৪. এরপর মোবাইল নম্বর ভেরিফিকেশনের জন্য একটি কোড পাঠানো হবে। এর মেয়াদ থাকে পাঠানোর এক মিনিট পর্যন্ত। মোবাইলে এসএমএস আসার সাথে সাথেই এই কোড নম্বর দিয়ে ভেরিফিকেশন করে নিতে হবে। মনে রাখবেন গোপন কোড কারো সাথে শেয়ার করা যাবে না।
৫. ভেরিফিকেশন কোড কনফার্ম করার পর পরবর্তী ধাপে জাতীয় পরিচয় পত্র এর ছবি তুলতে হবে। সামনের দিক এবং পরে পিছনের দিকের ছবি তুলে দিতে হবে।
৬. জাতীয় পরিচয় পত্র দিয়ে সাবমিট করার পর এনআইডির সকল তথ্য দেখাবে। যদি সকল তথ্য সঠিক থাকে তাহলে পরবর্তী ধাপে চলে যেতে হবে।
৭. পরবর্তী ধাপে যে ব্যক্তির জাতীয় পরিচয় পত্র দিয়ে অ্যাকাউন্ট খোলা হয়েছে তার ফেইস ভেরিফিকেশন দিতে হবে। এজন্য ছবি তুলুন অপশনটিতে ক্লিক করতে হবে এবং ছবি তুলতে হবে। তবে খেয়াল রাখতে হবে যাতে পর্যাপ্ত পরিমাণ যেন আলো থাকে আশেপাশে।
৮. সকল তথ্য সঠিক থাকলে নিশ্চিত বাটনে ক্লিক করলেই একাউন্ট খোলা হয়ে যাবে। এরপর বিকাশ অ্যাপ এ প্রবেশ করে মোবাইল নম্বর এবং আপনার মোবাইলে একটি কোড আসবে সেটি বসিয়ে লগইন করুন। তারপর একটি পিন নম্বর দিতে হবে। পিন নম্বর বসিয়ে পরবর্তী ধাপে গেলেই একাউন্ট সচল হয়ে যাবে।
এরপর থেকে টাকা লেনদেন করতে পারবেন খুব সহজে। উপর থেকে আমরা মোবাইলে বিকাশ একাউন্ট খোলা নিয়ম সম্পর্কে জানলাম। এখন আমরা অন্যান্য বিশেষ তথ্যগুলো সম্পর্কে জানব।
বিকাশ ব্যবহারের সুবিধা
- ডিজিটাল ওয়ালেট হওয়ার কারণে এখানে নিরাপদে টাকা জমা রাখা যায়।
- সারাদেশে সর্বত্র এর ব্যবহারকারী থাকার কারণে খুব সহজে টাকা লেনদেন করা যায়।
- এখান থেকে মোবাইল রিচার্জ করা যায় এবং রেমিটেন্স টাকাও উঠানো সম্ভব হয়।
- শপিং এর জন্য অনলাইন পেমেন্ট হিসেবে বিকাশের জনপ্রিয় তাও বেশ রয়েছে। প্রায় প্রতিটি শপিংমলে বিকাশ পেমেন্ট সিস্টেম রয়েছে। তাই এ ব্যাংকিং পদ্ধতিতেও শপিং এর পেমেন্ট করা যায় সহজেই।
- এছাড়াও সরকারি বিভিন্ন কাজ যেমন বিদ্যুৎ বিল, গ্যাস বিল, ট্রেনের টিকেট, চাকরির আবেদনের পেমেন্ট ইত্যাদিতেও ব্যবহার করা যায়।
- বিকাশ অ্যাপ ব্যবহার করলে প্রতিনিয়ত কোনো না কোনো অফার উপভোগ করার সুবিধা পাওয়া যায়।
বিকাশের কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্যাবলী
- বিকাশ একাউন্টে প্রবেশ করার কোড হচ্ছে *247#.
- বিকাশ পার্সোনাল টু পার্সোনাল টাকা পাঠানোর জন্য মাত্র ৫ টাকা ফি দিতে হয়। যেকোনো একটি অ্যামাউন্টের ক্ষেত্রে। সেটা হোক ৫০০ টাকা কিংবা ৫ হাজার টাকা। তবে প্রিয় নম্বরে সম্পূর্ণ ফ্রিতে টাকা লেনদেন করা যায়।
- বিকাশ থেকে ক্যাশ আউট চার্জ মাত্র ১৮ টাকা কিছু পয়সা। যদি প্রিয় নম্বরে ক্যাশ আউট করা হয় তাহলে এর জন্য কাটে ১৪ টাকা কিছু পয়সা।
- এছাড়া প্রতিটি কাজের জন্য আলাদা আলাদা অপশন দেওয়া রয়েছে। নির্দিষ্ট ব্যবহারের ওপর ভিত্তি করে গ্রাহকদের অফার প্রদান করা হয়।
আজকে আমরা জানলাম মোবাইলে বিকাশ একাউন্ট খোলার নিয়ম সম্পর্কে। মোবাইলে নগদ একাউন্ট খোলার নিয়ম জানতে নিচের এই লিংকে ক্লিক করুন।