আদানি গ্ৰুপের শিখরে থেকে শূন্যের গল্প : কথায় আছে ” কোন কিছু অর্জন করতে হলে অনেক কষ্ট অনেক ভয় প্রয়োজন কিন্তু যেতে হলে এক নিমিষেই চলে যায় । তাই কিছু গড়তে হলে স্থির গতিতে গড়তে হয় তাহলে জিনিষটা অনেক অনেক মজবুত হয় ।আমি আজ শেয়ার করলাম গৌতম আমদানির শূন্যে আসার গল্প।
আদানি গ্ৰুপের শিখরে থেকে শূন্যে আসার গল্প: ” শনির দশা কাটছেনা আদানি গ্ৰুপের।
গৌতম আদানির পরিচয়: Gautam Adani
গৌতম আদানি একজন ভারতীয় শিল্পপতি ,যিনি আদানি গ্ৰুপের চেয়ারম্যান ও প্রতিষ্টাতা ।গৌতম আদানি ২৪ জুন ১৯৬২ সালে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ভারতের আহমেদাবাদ ভিত্তিক বন্দর উন্নয়ন পরিচালনাকারী বহুজাতিক গোষ্ঠির সাথে সংযুক্ত রয়েছেন।গৌতম আদানি তার স্ত্রী প্রীতি আদানির নেতৃত্বাদীন আদানি ফাউন্ডেশনের সভাপতি।
আদানি Adani Group:
তিনি ১৯৮৮ সালে আদানি গোষ্ঠি প্রতিষ্টা করেন এবং ব্যবসাকে ,সম্পদ,সরবরাহ শক্তি ,কৃষি প্রতিরক্ষা,ও মহাকাশ গবেষণার সাথে বৈচিত্র্যময় করেন।
ফোর্বস এর মতে ২০২২ সালে ১৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তার পরিবারের সম্পত্তির পরিমাণ ছিল
- ১৫২.১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।তিনি এশিয়া তথা ভারতের দ্বিতীয় ধনী ব্যাক্তি।
- আদানি দ্বিতীয় ধনী ব্যাক্তির স্থান অর্জন করেছিলেন ২০১৯ সালে।
- গৌতম আদানি ইন্ডিয়া টুডে পত্রিকায় ২০১২ সালে ভারতের তৃতীয় ক্ষমতাশীল ব্যাক্তি হিসাবে স্থান পেয়েছেন।
- তিনি ২০১৮ সাল পর্যন্ত আদানি স্পোটস এন্ড এসিয়েজেড লিমিটেডের ৬৬% আদানি উদ্যোগ সমূহের 75% ,আদানি পাওয়ারে 73% এবং আদানি ট্রান্সমিশেন লিমিটেডের 75% অংশীদারী ছিলেন।
গৌতম আদানির প্রথম জীবন:
গৌতম আদানি গুজরাতের আহমেদাবাদের একটি জৈন পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন তিনি শান্তিলাল ও শান্তি আদানির সন্তান।তারা সাত ভাই বোন।
গৌতম আদানির ব্যাক্তিগত জীবন: Gautam Adani Personal Lifestyle
গৌতম আদানি প্রীতি আদানিকে বিয়ে করেন।তাদের দাম্পত্য জীবনে দুই ছেলে করন আদানি ও জিৎ আদানি ।তিনি জৈন আন্তর্জাতিক বাণিজ্য সংস্থার সদস্য।
এবার গৌতম আদানির শিখরে থেকে শূন্যের গল্প অবলম্বনে :
গৌতম আদানি ছিলেন ভারতের ক্ষমতাসীন ব্যাক্তিদের মধ্যে তৃতীয় এবং বিশ্বের ধনী ব্যাক্তিদের মধ্যে দ্বিতীয় স্থান অর্জন করেছিলেন।এত ধনী এত ক্ষমতাসীন ব্যাক্তির পতন কি মেনে নেয়া যায় কিভাবে এই ধস এই পতন তার বিস্তারিত একটু শেয়ার করলাম ।
শনির দশা কাটছে না আদানি গ্ৰুপ অব কোম্পানির । রকেটের গতিতে উড়ছিল যার শেয়ার ব্যবসা আজ তা থমকে যাওয়ার পথে।আজকাল আদানির সাম্রাজ্যের উপর রীতিমতো ঝড় বয়ে চলছে। শূন্য থেকে শীর্ষে দশ ব্যাক্তির তালিকায় ছিলেন আদানি। কিন্তু এক রিপোর্টে বেশামাল আদানি গ্ৰুপ।
- যারা আদানি গ্ৰুপের সাথে জড়িত অর্থাৎ যারা আদানি গ্ৰুপের শেয়ারে বিনিয়োগ করেছেন তারা কি অর্থ ফেরত পাবে? পাবেন?
- এমনকি আদানি বিদ্যুৎ প্রকল্প ঘিরে বাংলাদেশ কি কোন ক্ষতির মুখে পড়বে?
গৌতম আদানি ভারতে কতটা গুরুত্বপূর্ণ ?
আদানি গ্ৰুপের কর্ণধার গৌতম আদানি ভারতে কতটা গুরুত্বপূর্ণ কেননা গৌতম আদানি সাম্রাজ্যের বিস্তার বিশ্বব্যাপী।
আদানি শিল্পগোষ্ঠীর অধিনে বিদ্যুৎ উৎপাদন ক, সঞ্চালন ,গ্যাস সরবরাহ সড়ক ও রেলপথ নির্মাণ বিমানবন্দর , নবায়নযোগ্য জ্বালানি সহ বিভিন্ন খাতে উৎপাদন রয়েছে মোট সাতটি কোম্পানির ।আর দেশের সবচেয়ে বড় ব্যাংক “State Bank of India” এবং বৃহত্তম বীমার সংস্থা ,লাইফ ইন্স্যুরেন্স সহ হাজার হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ রয়েছে আদানি গ্ৰুপের।
গৌতম আদানির রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক ও বীমা সংস্থারগুলোর আর নিজস্ব অর্থের ঝুড়ির মিলনে তার ভার। এ শিল্পগোষ্ঠীতে ভারতের মোট ব্যাংকগুলোর বিনিয়োগ অত্যন্ত ১০ বিলিয়ন ডলার বলে ধারনা করা হয়।যা আদানির মোট ঋণের পরিমানের ৩৮ শতাংশের মতো।দেশটির অর্থনৈতিক উন্নয়নের সাথে তাল মিলিয়ে আদানি শিল্প গোষ্ঠীর বিস্তার চলছিল সমানে সমান।তবে ” Hindenburg Research” এর রিপোর্টের কারনে আদানি গ্ৰুপের যে ধস নেমেছে তার লাগাম টেনে ধরতে হয়তো পারবেনা আদানি গ্ৰুপ।
শেয়ার বাজারের অব্যাহত দর পতনের কারনে ১০ হাজার কোটি ডলার হারিয়ে বিশ্বের শেয়ার বাজারের ধনী ব্যাক্তিদের তালিকায় এখন গৌতম আদানির অবস্থান ২২ তম পূর্বে ধনী ব্যাক্তিদের তালিকায় যিনি ছিলেন ২য়।
শূন্য থেকে শিখরে আবার শিখরে থেকে শূন্যে আসার গল্প:
“HINDENBURG” আসলে কি?
চলতি বছরের ২৪ জানুয়ারি আদানি গ্ৰুপের বিরুদ্ধে আর্থিক প্রতারনা ও কারচুপির অভিযোগে অভিযোগ তুলে একটি চাঞ্চল্যকর প্রতিবেদন প্রকাশ করেন ” Hindenburg Research” এই ” Hindenburg Research ” মূলত নেদানএন্ডারসন নামে এক ব্যক্তির তৈরি মার্কিন আর্থিক গবেষণা সংস্থা।এটি ইকুইটি বিষয় নিয়ে গবেষণা করে থাকে।
এশীয়ার শীর্ষ ধনী ব্যাক্তিদের তালিকায় গৌতম আদানি আর এই বিশেষ ব্যাক্তি গৌতম আদানির বিরুদ্ধে আর্থিক নয় ছয়ের অভিযোগ আনে ” ” Hindenburg Research ” এতে শকসেলিং এর বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা আদানি গ্ৰুপ ।
একজন বিনিয়োগকারী যখন কোন কোম্পানির ধর কমতে পারে এমন ধারণা থেকে শেয়ার বিক্রি করে দেয় যাতে করে কম দামে কেনা যায় সেটি হলো শকসেলিং । শেয়ার বাজারে আর্থিক লেনদেন ও প্রতারনার অভিযোগ আনা হয় ঐ রিপোর্টে আদানি গ্ৰুপের বিরুদ্ধে।
আদানির বিশাল সম্পদের পাহাড় এক নিমিষেই ধসে গেল । জানুয়ারি মাসের শেষ দিন ছিল আদানি গ্ৰুপের আড়াইশো কোটি ডলার এর শেয়ার কেনার শেষ দিন।এফপিও প্রত্যাহারের পর থেকে সবচেয়ে বেশী চাপের মুখে পড়ে আদানি গ্ৰুপ এবং এতে করে শেয়ার বাজারের ধর কমে যায় 35 শতাংশ ।আদানি গ্ৰুপের বাজার মূলধন কমে যায় ১০০ বিলিয়ন ডলার। সুতরাং এই কথা বলা যায় বিনিয়োগ কারী কতটা বিপদে।
hindenburg research about adani group
এই ছিল গৌতম আদানির আদানি গ্ৰুপের ধসের অন্যতম কারন আকাশচুম্বী ছিল তার সম্পদ এখন তা নড়চড়ে বসে আসছে।এশীয়ার দ্বিতীয় ধনী ব্যাক্তিদের একজন গৌতম আদানি তার এই পতন দেখে বলতে হয় আকাশচুম্বী যাই হোক না কেন সবচেয়ে ভালো ধীর গতিতে কোন পাহাড় গড়া।যদি কোন ভূল থাকে তাহলে কমেন্টে জানাবেন এবং আরো শেয়ার করার সহায়তা প্রদান করবেন।
Hindenburg Research Adani Report PDF Download Click Here
Also Read: মার্ক জুকারবার্গের জীবনী | Mark Zuckerberg Biography