শবে কদরের ফজিলত | লাইলাতুল কদরের নামাজের নিয়ম ও দোয়া, নিয়ত

মাহফুজুর রহমান

শবে কদরের ফজিলত: লাইলাতুল কদরের দোয়া ও শবে কদরের নামাজ সম্পর্কে বিস্তারিত: লাইলাতুল কদর একটি বরকতময় ও মহমান্বিত রজনী। ‘লাইলাতুল কদর’ আরবি বাক্য। আমরা যাকে কদর রজনী বলে থাকি।কেউবা ডাকেন শবে কদর ফারসি হলো শবে কদর। লাইলাতুল কদর অর্থ ভাগ্যনির্ধারণী রজনী।

লাইলাতুল কদর অর্থ কি?

লাইলাতুল কদর অর্থ কি? লাইলাতুল কদর অর্থ হল “ভাগ্য নির্ধারণী রজনী”। লাইতুল কদরকে শবে কদরও বলা হয়।

শবে কদর অর্থ কি?

লাইলাতুল কদর ভারতীয় উপমহাদেশে শবে কদর নামেও পরিচিত।  শবে কদর ফার্সি শব্দ। শবে কদর অর্থ হলো, ভাগ্য রজনী। মহমান্বিত রজনী।

রমজান কুরআন নাজিলের মাস।

পবিত্র কোরআন মাজিদ অবতীর্ণের মাস রমজান মাস, কোরআন নাজিল হয় শবে কদরের রাতে। এ রাতেই প্রথম পবিত্র মক্কায় হেরা পর্বতের গুহায় আল্লাহ রাব্বুল আলামিন এর পক্ষ থেকে জিবরাইল আ. মুহাম্মদ সা. এর কাছে ওহী নিয়ে আসেন। কুরআন নাজিল শুরু হয় এ মাসে। আল্লাহ বলেন انا انزلناه في ليلة القدرالقدر নিশ্চয় আমি কুরআন কদরের রাতে আবতীর্ণ করেছি।

শবে কদরের ফজিলত

লাইলাতুল কদর কী?

লাইলাতুল কদর হলো এক বরকতময় রজনী। জীবন্ত মুজেজা, মানব জাতীর হেদায়তগ্রন্হ কুরআনুল কারিম এ রাজনীতে নাজিল হয়। কদরের রজনী কি? কদরের রজনী হল হাজার মাসের চেয়ে উত্তম। “খাইরুম মিন আলফি শাহর”। এরাতে ইবাদত করায় অধিক ফজিলতপূর্ণ। শবে কদরের রাতে মুসলমানরা ইবাদাতে মশগুল থাকেন। যদি বেজোড় রজনিতে শবে কদর বা লাইলাতুল কদর পেয়ে যান,  তাহলে তা হাজার মস ইবাদত করার সমান। হাজার মাস ইবাদত করে যে সওয়াব, শবে কদর বা লাইলাতুল কদরের রাতে ইবাদত করলে সই সওয়াব

সুরা কদর।

সুরা কদর হলো কুরআন কারিমের একটি সুরা। সুরাতুল কদরের আলোচ্য বিষয় লাইলাতুল কদর। উক্ত সুরায় লাইলাতুল কদর সম্পর্কে বলা হয়েছে। লাইলাতুল কদরের ফজিলত বর্ণনা করা হয়েছে। সুরা কদর হলো।

انا انزلناه في ليلة القدر،

লাইতুল কদরের দোয়া।

লাইতুল কদর হাজার রাতের চেয়ে উত্তম। রাসুলুল্লাহ সা, বলেছেন শেষ দশকের বিজোর রাতে লাইলাতুল কদর তালাশ কর। আয়েশা রা. রাসুলুল্লাহ সা. কে বললেন,  আমি যদি শবে কদর বা লাইলাতুল কদর পেয়ে যায়, তাহলে কোন দোয়া করব? রাসুলুল্লাহ সা,  আয়েশা রা. সহ আমাদেরকে লাইলাতুল কদরের দোয়া শিখিয়ে দিয়েছেন

“اللهم
إِنَّكَ عُفُوٌّ تُحِبُّ الْعَفْوَ فَاعْفُ عَني

উচ্চারণ : ‘আল্লাহুম্মা ইন্না কা আফুউউন; তুহিব্বুল আ’ফওয়া; ফাফু আন্নি ইয়া কারিম।’

অর্থ : হে আল্লাহ! আপনি ক্ষমাপরায়ন;আপনি ক্ষমা করতে ভালোবাসেন; অতএব আমাকে ক্ষমা করে দিন। (মুসনাদে আহমাদ, ইবনে মাজাহ, তিরমিজি)

লাইলাতুল কদর কোন দিন?

লাইলাতুল কদরের নির্দিষ্ট দিন নেই। রমজানের শেষ দশকে লাইলাতুল কদর তালাশ করতে হয়। কেননা রাসুল সা বলেছেন “তোমরা রমজানের শেষ দশকের বিজোড় রাতগুলোতে শবে কদর সন্ধান করো।’ (মুসলিম)। বেজোর রাতগুলো হল ২১, ২৩, ২৫, ২৭ ও ২৯।

লাইলাতুল কদর কখন।

লাইলাতুল কদরের রাতে সূর্যাস্তের পর আল্লাহ তাআলা প্রথম আসমানে অবতরণ করে তার বান্দাদের ডেকে বলেন ‘কে আছ অসুস্থ! আমার কাছে চাও আমি শেফা দান করব,  কে আছ অভাবগ্রস্ত আমার কাছে চাও আমি প্রাচুর্য দান করব, কে আছ বিপদগ্রস্ত! আমার কাছে চাও আমি বিপদমুক্ত করে দেব।

লাইলাতুল কদর কবে।

লাইলাতুল কদর কবে সঠিক বলা যায় না। তবে রমজানের শেষ দশকের বেজোড় রাত্রে লাইলাতুল কদরের কথা বলা হয়েছে।

 

ইতিকাফ কি?

লাইলাতুল কদর রমজানের শেষদশকে। তা পাওয়ার জন্য রাসুলুল্লাহ সা. শেষের ১০ দিন ইতিকাফ করতেন। হজরত আয়িশা (রা.) বলেন, ‘ওফাতের আগ পর্যন্ত প্রত্যেক রমজানের শেষের ১০ দিন রাসুল (সা.) ইতিকাফ করতেন।’ (বুখারি: ২৩২৬, মুসলিম শরীফ: ১১৭২)।

লাইলাতুল কদরের হাদিস।

লাইলাতুল কদর সম্পর্কে হাদিস

লাইলাতুল কদর সম্পর্কে হাদিস: আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, যে ব্যক্তি ঈমানের সাথে, সওয়াব লাভের আশায় লাইলাতুল ক্বদ্‌রে রাত জেগে দাঁড়িয়ে সালাত আদায় করে, তার পূর্ববর্তী গুনাহসমূহ মাফ করে দেয়া হয়। বুখারি।

রাসুল সা বলেছেন “তোমরা রমজানের শেষ দশকের বিজোড় রাতগুলোতে শবে কদর সন্ধান করো।’ (মুসলিম)।
‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

আয়েশা রা, থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, যখন রমযানের শেষ দশক আসত তখন রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর লুঙ্গি বেঁধে নিতেন এবং রাত্র জেগে থাকতেন ও পরিবার-পরিজনকে জাগিয়ে দিতেন। বুখারী।

লাইলাতুল কদর স্টাটাস শুভেচ্ছা।

১, লাইলাতুল কদর হাজার মাসের চেয়ে উত্তম।
আজ পবিত্র শবে কদর।
সবাইকে শবে কদরের শুভেচ্ছা।

লাইলাতুল কদরের নামাজ
শবে কদরের নামাজ কত রাকাত।

শবে কদর বা লাইলাতুল কদরের নির্দিষ্ট কোন নামাজ নেই। এ রাতে যত বেশি পারেন নফল নামাজ আদয় করেন। সাথে সাথে তাহাজ্জুদ নামাজ পড়েন। তাহাজ্জুদ নামাজ আট রাকাত পড়তে পারেন।

লাইলাতুল কদরের নামাজের নিয়ত।

লাইলাতুল কদরের নামাজ পড়ার নিয়ম বাংলায় পড়ে নিলে হয়। নিয়ত মানে মনের ইচ্ছা।
তারপরও আমরা আরবি নিয়ত আপনাদের কল্যাণে তুলে ধরছি।

শবে কদরের নামাজের নিয়ত।
“নাওয়াইতু আন উসাল্লিয়া লিল্লাহি তায়ালা রাকআতাই সালাতি লাইলাতিল কদরে নাফলি, মুতাওয়াজ্জিহান ইলা জিহাতিল কা বাতিস শারীফাতি “আল্লাহুআকবার”’।

লাইলাতুল কদরের নামাজের নিয়ম।

লাইলাতুল কদরের নির্দিষ্ট নামাজ নেই। আপনি দুই রাকাত করে করে নফল নামাজ বেশি বেশি পড়বেন। যত বেশি পারেন, আদায় করবেন। এ রাতের ইবাদাত হাজার মাসের চেয়ে উত্তম। তাছাড়া তাহাজ্জুদের নামাজ পড়ুন। রাসুলুল্লাহ তাহাজ্জুদের নামাজ আট রাকাত পড়তেন।

শবে কদরের নামাজ কত রাকাত।

শবে কদরের নামাজ নেই। নামাজ নেই তাই রাকাত থাকার প্রশ্ন উঠে না। তবে আপনার বেশি বেশি নফল নামাজ পড়তে পারেন। তাহাজ্জুদ নামাজ বেশি বেশি পড়ুন। তাসবিহ তাহলিল বেশি বেশি করে করুন।

 

Share This Article
মাহফুজুর রহমান হলেন স্কলার্সমীর প্রতিষ্ঠাতা, তিনি প্রফেশনালি ওয়েব ডেভেলপমেন্ট এবং SEO (Search Engine Optimization) বিষয়ে কাজ করেন, SEO Friendly নিউজ এবং ব্লগ পোস্টে দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে কাজ করে আসতেছে। যেকোনো প্রয়োজনে যোগাযোগ করার জন্য কন্টাক্ট করতে পারেন।