Jeff Bezos এর জীবনী – কিভাবে বিশ্বের শীর্ষ ধনী হলেন ।

মাহফুজুর রহমান

বর্তমান কালে ইন্টারনেট ব্যবহার করে না, এমন কোন মানুষ খুঁজে পাওয়া দায়।আর সেই ইন্টারনেট দুনিয়ায় “জেফ বেজোস “(Jeff Bezos)একটি পরিচিত নাম।তাঁর সুখ্যাতিও সবার মুখে মুখে।  তিনি ই-কমার্সের বিপ্লব ঘটান।তাঁর হাত ধরে বিশ্ববাসী এই টার্মের সাথে পরিচিত।তাকে ই-কমার্সের  উদ্ভাবক ও প্রতিকৃত বলা হয়।

তিনি ই-কমার্স সাইট Amazon.com প্রতিষ্টা করেন।সেকেলে অর্থব্যবস্থায় তিনি পরিবর্তনে স্পর্শ পরশ ঢেলে দেন।তাঁর Amazon.com মাধ্যমে  বিশ্বের অর্থনৈতিক পরিমন্ডলে যুগান্তকারী পরিবর্তন  এনেছেন। শুধু আমাজন নয়, তার প্রতিটি প্রদেক্ষেপ,প্রতিটি দাপে,যেদিকে হাত দিয়েছেন,সবসময় সফলতা তাকে হাতছানি দিয়েছে।

তাহলে চলুন সফল এই মানুষ টির উত্থান পতনের সাথে পরিচিত হওয়া যাক। Scholarsme ওয়েবসাইট থেকে থাকছে তাঁর জিবন ও Amazon এর গল্প। কিভাবে জিরো থেকে বিশ্বের অন্যতম বৃহত্তম প্রতিষ্টানে রূপ নিল Amazon।  দুই পর্বের লেখা টিতে প্রথম পর্বে থাকছে, জেফের (jeff bezos)ব্যাক্তিগত  উত্থান পতন, আর দ্বিতীয় পর্বে থাকবে  এমাজন শুরুর কথা ও নানান চড়াই উৎরাই পেরিয়ে জেফের সাফল্যর গল্প।

Jeff Bezos Biography, Family, Wife, home country

জেফ বেজোস পুরো নাম, জেফরি পেস টেন জার্গেনসেন তিনি ১৯৬৪ সালের ১২ জানুয়ারি, নিউ মেক্সিকোর আল বুকারকি শহরে জন্মগ্রহণ করেন।

জন্মে সূত্রে তার বাবা পেট জার্গেনসন, জেফের মায়ের নাম ছিল জ্যাকলিন গিসজরগেনসিন,  টেড জরগেনসিন একজন উইনিস্যারকেলিষ্ট ছিলেন, টেড এলবোকিরকেট স্হানীয় টপ উইনিস্যারকেলিষ্ট এর মধ্য একজন  জেফ শিশু থাকা অবস্হায় তিনি জাতীয় পর্যায়ে অনেক গুলো অনুষ্ঠানে নিজের প্রতিভার স্বাক্ষর রাখতে সক্ষম হয়েছিলেন। পেট যখন জেফ মাতা জ্যাকেলিনকে বিয়ে করেন।তখন পেট ছিলেন মাত্র আটারো বয়সের যুবক।আর জ্যাকেলিন ছিলেন সতের বছরের যুবতী।তাঁরা দুজনই তখন কেবল হাইস্কুলের গন্ডি পার করে ছিলেন। জেফের  জন্ম গত বাবার টেড জরগেনসন একজন মধ্যব ছিলেন, সাংসারিক কাজের প্রতিও তার খুব একটা মনযোগ ছিলো না। এর ফলে একটি শিশু সন্তান নিয়ে সংসার পরিচালনা জ্যাকলিনের জন্য কঠিন হয়ে পড়ে, ফলে বিয়ের এক বৎসরের কাছাকাছি সময়  পরই জ্যাকলিন ও টেড আলাদা বসবাস শুরু করেন। জ্যাকলিন জেফ কে নিয়ে টেক্সাসের তাঁর  মায়ের বাড়িতে চলে আসেন।
পরর্বতীতে বিয়ের ঠিক সতের মাসের দিকে জ্যাকলিন জীবনে সবচেয়ে বড় সিন্ধান্তে উপনীত হন।তিনি বিবাহিত জীবনের ইতি টানতে টেডের কাছে ডিভোর্সের জন্য বলেন।টেডও তাতে সম্মত ছিলেন। কোন রকম দ্বীধা-দ্বন্দ্ব  ছাড়াই ডিভোর্সের জন্য রাজি হন। আইন  মুতাবেক সন্তানের অর্থাৎ জেফের জন্য নিদৃষ্ট  পরিমাণ অর্থ দিতে রাজি ছিলেন। কিন্তু পরর্বতীতে আর্থিক সংকটের কারণে তিনি আর অর্থে যোগান নিতে সক্ষম হননি।

ডিভোর্সের তিন বৎসর পরে জ্যকলিন মাইক ব্যাজেসকে বিয়ে করেন। মাইক ব্যাজেসের জন্মস্হান কিউবাতে। মাইক পনের বছর বয়সে আমেরিকায় পালিয়ে আসেন, অতঃপর  ইউনির্ভাসিটি অফ আল বুকিরকে চাকরি শুরু করেন। বিয়ের পরে জ্যাকলিন-মাইক দম্পতি ট্রেকসাসে হিউস্টনে বসবাস শুরু করেন। মাইক ছিলেন উদার মনের মানুষ।জেফকে তিনি ভীষণ ভলোবাসতেন।তাই স্বেচ্ছায় জেফকে দক্তক নিতে রাজি হন।

জেফের( Jeff) নামের সাথে বেজোস হয়ত অনেককে অবাক করে তাই না?অনেকের হয়ত চিন্তার উদ্রেক হয় বেজোস পদবী কোথা থেকে আসল?এরকম প্রশ্ন আপনার মতন অনেকেই মাথায় খেলছিল।জেফ তাঁর সং বাবা “মাইকের” পদবি নিজের নামের সাথে যুক্ত করেন।

সৎ বাবার নামের পদবি ব্যবহার ও নিজের বাবার নাম নিয়ে  প্রশ্নের জবাবে ১৯৯৯ সালে “আমেরিকার ম্যাগাজিন ওয়াল্ডে”র সাথে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তাঁর আসল বাবা পেট জ্যার্গেনসন সম্পর্কে জেফ বেজোস বলেন – “বাস্তবিক অর্থে আমি যত দূর জানি তিনি কেবল জন্মে সূত্রে আমার বাবা। ডাক্তারের ফরম পূরণের সময় বাবার ঘরের নামে মধ্যে তার নাম লিখতে গেলে কেবল তার নাম আমার মনে পড়ে। এমন কি তার সাথে আমার কখনো সাক্ষাৎ হয়েছে বলে আমার মনে পড়ে না”।

সম্পর্কের এমন কাটা তরে বিঁধে পড়লেও, পরর্বতীতে জেফ ও তার মা ঘুরে দাড়িয়ে ছিলেন।বর্তমান বিশ্বের অন্যান্য ছেলেদের মতন জেফ কোন  সাধারণ ঘরের ছিলেন না। শিশু বয়সের সময় কালে জেফের মায়ের টেক্সাসে পঁচিশ একরের মত সম্পত্তি  ছিল। জেফ (Jeff)তার শিশু কাল কাটিয়েছেন হিউস্টনের “রির্ভাস অস্কস এলেমেন্টারি স্কুলে”। তিনি এই স্কুল টিতে ফোর্থ গ্রেড থেকে  সিক্স গ্রেড পর্যন্ত পড়েছেন।

তিনি গ্রীস্ম কালের অবকাশ সময়টা তার নানার বাড়ীতে কাটাতেন, তখন জেফ নিজেকে বিভিন্ন কাজে ব্যাস্ত রাখতেন। সখের কাজের পাশাপাশি, ফার্মের বিভিন্ন কাজে দক্ষ হয়ে উঠেন।এসব কাজ তাঁর দক্ষ একজন মানুষে পরিণত হবার হাতেখড়ি ছিল।পরর্বতীতে এসব অভিজ্ঞতা তার অনেক কাজে লাগে বলে জানান তিনি।

প্রতিটি মানুষ কাউকে না কাউকে অনুকরণ করে থাকে।সে তাঁর মতন হবার স্বপ্ন দেখে।জেফের ক্ষেত্রেও তাঁর ব্যতিক্রম ছিল না।
তিনি তাঁর নানা “লরেন্স জায়েজ” কে নিজের  রোল মডেল হিসাবে মনে করতেন।

এসব কাজের পাশাপাশি ছোট্ট বেলা থেকে মেগা নিক্সসের প্রতি তার তীব্র আগ্রহ ছিল।  ছোট্ট বয়েস থেকেই জেফের (Jeff bezos) আগ্রহ দেখা যায় বিজ্ঞান ও ইঞ্জিনিয়ারিংএর দিকে। তিন বছর বয়েসেই তিনি স্ক্রু-ড্রাইভার দিয়ে তাঁর খেলনা খুলে ফেলতে শিখেছিলেন । এছাড়াও একদম ছোট্ট বয়সে তিনি একটি ইলেকট্রনিক এলার্ম তৈরি করেন।মূলত ছোট্ট ভাই-বোনদের নিজের ঘরের থেকে দূরে রাখার উদ্দেশ্য তিনি এলার্ম টি তৈরি করেন।

জেফ (Jeff bezos)নিজের ঘরকে ছোট বেলাতেই একরকম লেব্রোটরি বানিয়ে ফেলেছিলেন। পরবর্তীতে তাঁর বাবা-মা এগুলোকে গ্রেজে সরিয়ে নিতে বলেন। ছোট বেলা থেকেই  বই পড়ার প্রতি তার তীব্র আগ্রহ ছিল।সেই  আগ্রহকে কাজে লাগিয়ে ইস্কুলের সিক্স গ্রেডে থাকা অবস্থায় জেফ নিজের ইস্কুলেই প্রথম ব্যাবসা শুরু করেন।

তিনি ব্যাবসা প্রতিষ্ঠানের নাম দিয়ে ছিলেন

“ড্রেডডিম ইন্সটিটিউট”।এটি ছিল ফোর্থ ফিফট সিক্স গেটটার দের জন্য একটি  সামার ক্যাম্প, এই সামার ক্যাম্পে অংশ গ্রহণ করতে হলে নিদিষ্ট কিছু বই পড়তে হত। সেক্স গ্রেডে পড়া শেষে তাঁর পুরো পরিবার ফ্লুরিডায় চলে যায়।

তখন তিনি (jeff bezos)নিয়ামি পাল মেট সিনিয়র হাই স্কুলে ভর্তি হন।এখানে তিনি একাডেমিক পর্যায়ে খুব ভালো করতে থাকেন। এক সময় তিনি তার কম্পিউটারে প্রতি তার ঝুঁক আবিষ্কার করেন। মাত্র আটার বয়সে ১৯৮২ সালে ইউনিভার্সিটি অফ ফ্রোরিডায় সাইন্স ট্রেডিং পোগ্রামে আমন্ত্রিত হন। নিজের প্রতিভার স্বাক্ষর দিয়ে তিনি এই প্রতিযোগিতায় “সিলভার নাইট পুরস্কার”পান। তিনি তাঁর হাই স্কুলে সর্বোচ্চ নাম্বার প্রাপ্তির জন্য “ব্রেলি ভিক্টরিয়ান” হন।

অতঃপর তিনি (jeff bezos) ইউনিভার্সিটি অফ প্রিন্সটন থেকে পদার্থ বিজ্ঞানে স্নাতক করার সিন্ধান্ত নেন। কিন্ত তিনি তার সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করেন। তিনি নিজের আগ্রহের যায়গা অর্থাৎ কম্পিউটার সাইন্স নিয়ে পড়ার সিদ্ধান্ত নেন।ফলে তিনি একি সাথে কম্পিউটার সাইন্স এবং তরিৎ কৌশল বিদ্যায় ইউনির্ভাসিটি অফ প্রিন্সটন থেকে ১৯৮৬ সালে স্নাতক সম্পন্ন করেন। তিনি প্রিন্সটনে পড়ার সময় “দ্যা  থাউ ব্যাটাপাই এসোসিয়েন্স”র সদস্য হন।

বিশ্ববিদ্যালয় পড়ার সময় সামার যব অর্থাৎ কেবল  গ্রীষ্মকালের সময় চাকরি করতেন।এ সময় তিনি নরওয়েতে প্রোগ্রাম আরও এমালিষ্ট হিসাবে কাজ করেন ।সে বছর ক্লেলপফোর্নিয়ায় থাকা অবস্থায় তিনি একটি “আই বিয়ে এম প্রোগ্রামে”কাজ করেন।এছাড়া তিনি”প্রিন্সটন স্টুডেন্ট ফোরর্টি এসপ্রোরেশন এন্ড ডেভলপমেন্ট অফ  এস্প্রেস”র প্রেসিডেন্ড নির্বাচিত হন। স্নাতক শেষ করার পর তিনি “ওয়াল্ড ইস্টিটে “চাকরী নেন।

এ সময়টায়  কম্পিউটার ইন্জিনিয়ারিং এর প্রচুর চাহিদা ছিল।যার ফলে তিনি অনেক গুলো আইটি ফর্মে চাকরীর সুযোগ পান। ওয়াল স্ট্রিটের পর তিনি ফ্রিটেলে কাজ শুরু করেন। এখানে তিনি আন্তর্জাতিক বাজারে নেটওয়ার্কিং এর জন্য কাজ করেন। কাজের সুবাদে প্রতি সাপ্তাহে  তাকে নিউইয়র্কের লন্ডনে যাতায়াত করতে হত।তিনি ব্যাংকার ট্রাস্টে চাকরী কালীল অবস্থায় প্রতিষ্ঠানটির সহ- সভাপতি নির্বাচিত হন।কিন্তু সেখানেও খুব বেশি দিন স্থায়ী হন নি।তার চাকরী জীবনের পর্যালোচনা করলে দেখা যায়,উনি প্রথম দিকে টেকনোলজি ফার্ম গুলোতে কাজ করলেও পরর্বতীতে তিনি বিজনেস ফার্ম গুলোতে চাকরী করেন।তবে বিজনেস ফার্ম কিম্বা টেকনোলজি ফার্ম দুই ক্ষেত্রে নিজের সফলতার স্বাক্ষর রেখেছেন।এর পর তিনি “ইনভেস্টমেন ফার্ম ডি ইস এন্ড কোং “এ চাকরী করেন। এই প্রতিষ্ঠানটি ছিল জেফের অন্যান্য প্রতিষ্ঠান গুলো থেকে অনেকটা ভিন্ন। ডিস এন্ড কোং ইস্টক। অর্থাৎ পুঁজি বাজারের সাথে সম্পর্কিত। বিভিন্ন এপ্লিকেশন তৈরি করত, পাশাপাশি তারা স্টক মার্কেট নিয়ে গবেষণা করত।

এই প্রতিষ্ঠানটি তাঁর (Jeff bezos) কর্ম জীবন এবং ব্যাক্তি জীবনের প্রধান মুভ ছিল। এখানে তিনি তাঁর বর্তমান স্ত্রী। ম্যাকেঞ্জি বেজোস এর সাথে পরিচয় হয়।ম্যাকেঞ্জি বেজোস ইউনির্ভাসিটি অফ প্রিন্সটনে ইংরেজি সাহিত্যের উপর স্নাতক সম্পন্ন করেছেন। তিনি একই প্রতিষ্টানে সহযোগী গবেষক হিসাবে কাজ করতেন। তিনি (jeff bezos)একজন উপন্যাসিকও, তার লেখা প্রথম উপন্যাস দ্যা ট্রেস্টিং অফ লুথার এলভাইড,তাঁর প্রথম উপন্যাস,এটি ২০০৬ আমিরিকান বুক অওয়ার্ড পান। ডিশ ইন্টারভিউ বোর্ডে জেফ ম্যাক এন্জির প্রথম পরিক্ষা নেন।৬ মাসের প্রণয় পুর্ণতা পায় ১৯৯০ সালের বিবাহের মধ্যমে।

Fulbright Scholarship for Bangladeshi Students

Share This Article
মাহফুজুর রহমান হলেন স্কলার্সমীর প্রতিষ্ঠাতা, তিনি প্রফেশনালি ওয়েব ডেভেলপমেন্ট এবং SEO (Search Engine Optimization) বিষয়ে কাজ করেন, SEO Friendly নিউজ এবং ব্লগ পোস্টে দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে কাজ করে আসতেছে। যেকোনো প্রয়োজনে যোগাযোগ করার জন্য কন্টাক্ট করতে পারেন।