দেশের সমস্ত জ্বালানি তেলের দাম ৪০ থেকে ৫০ শতাংশ বৃদ্ধি : জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির কারণ? ডিজেল ৩৪ টাকা বাড়িয়ে ১১৪, অকটেন ৪৬ টাকা বাড়িয়ে ১৩৫ টাকা
পেট্রল, কেরোসিন, ও অকটেনের দাম বাড়ানোর কথা জানিয়েছে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়। প্রায় ৫০ শতাংশ দাম বেড়ে প্রতি লিটার কেরোসিন ১১৪ টাকা, ডিজেল ১১৪ টাকা, পেট্রল ১৩০ টাকা ও প্রতি লিটার অকটেন ১৩৫ টাকা করে কিনতে হবে
পূর্বে খুচরা মূল্য ছিল প্রতি লিটার কেরোসিন ৮০টাকা,ডিজেল ৮০ টাকা, পেট্রোল ৮৬ টাকা ও অকটেন ৮৯ টাকা।
সরকারের সিদ্ধান্ত প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গে ঢাকাসহ বিভিন্ন জ্বালানি স্টেশনগুলোতে দীর্ঘ সারি তৈরি হয় আগের দামে জ্বালানি তেল নেয়ার জন্য।
অনেক পাম্প গ্রাহকদের জ্বালানি তেল সরবরাহ করতে অস্বীকার করে, একটি বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি করে।
অর্থনীতিবিদরা বলছেন, জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি জনগণের জীবন ও জীবিকার ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলবে
বিবৃতিতে দাবি করা হয়েছে, আন্তর্জাতিক বাজারে উচ্চমূল্যের কারণে অনেক দেশে জ্বালানির দাম সংশোধন করতে হয়েছে।
গত ২২ মে প্রতিবেশী ভারত এক লিটার ডিজেলের দাম ৯২ দশমিক ৭৬ রুপি এবং পেট্রোলের দাম ১০৬ দশমিক ০৩ রুপি নির্ধারণ করে, যা এখন পর্যন্ত কার্যকর রয়েছে।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে যে এটি যথাক্রমে ১১৪ দশমিক ০৯ টাকা এবং ১৩০ দশমিক ০৯ টাকার সমতুল্য।
এটি উল্লেখ করেছে যে কলকাতা এবং বাংলাদেশের মধ্যে ডিজেল এবং পেট্রোলের দামের পার্থক্য ছিল যথাক্রমে ৩৪ দশমিক ০৯ এবং ৪৪ দশমিক ৪২ টাকা।
জ্বালানি তেলের দাম কত ২০২২ বিস্তারিত জানুন
জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির কারণ
বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ গতরাতে জ্বালানি মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে প্রতিমন্ত্রীর উদ্ধৃতি দিয়ে বলা হয়, নিরুপায় হয়েই জ্বালানির দাম কিছুটা সমন্বয়ে করতে হচ্ছে।বিবৃতিতে তিনি আরও বলেন, ‘জনবান্ধব আওয়ামী লীগ সরকার সব সময় আমজনতার স্বস্তি ও স্বাচ্ছন্দ্য বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নেয়। যত দিন সম্ভব ছিল, তত দিন সরকার জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর চিন্তা করেনি। অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে অনেকটা নিরুপায় হয়েই দাম কিছুটা সমন্বয়ে যেতে হচ্ছে।তিনি বলেন, ২০১৬ সালের এপ্রিল মাসে সরকার জ্বালানি তেলের দাম কমিয়ে দিয়েছিল। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে সে অনুযায়ী জ্বালানি তেলের দাম পুনর্বিবেচনা করা হবে।
মন্ত্রণালয়ের প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বাংলাদেশে দাম কম থাকায় জ্বালানি তেল পাচারের সম্ভাবনা থেকে যায়।
এতে আরও বলা হয়, বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন ২২ ফেব্রুয়ারি থেকে ৩১ জুলাই পর্যন্ত লোকসান করেছে ৮ হাজার ১৪ কোটি টাকা।
বর্তমানে আন্তর্জাতিক তেলের বাজার পরিস্থিতির কারণে বিপিসির আমদানি কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখাতে যৌক্তিক মূল্য সমন্বয় অপরিহার্য হয়ে পড়েছে বলেও জানিয়েছে জ্বালানি বিভাগ।
দেশে জ্বালানি তেলের দাম এক লাফে লিটারে ৩৪ থেকে ৪৬ টাকা বাড়িয়েছে সরকার। জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ম. তামিম বলেন
বেশি দাম বাড়ানোর চাপ অর্থনীতি নিতে পারবে না। তিনি আরও বলেছেন, দাম কিছুটা বাড়ানো হবে আশঙ্কা ছিল। যা বাড়ানো হয়েছে, তা চিন্তার বাইরে।
দেশের ইতিহাসে কখনোই জ্বালানি তেলের দাম একসঙ্গে এতটা বাড়ানো হয়নি কখনো।
জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির প্রভাব :
ঢাকায় যানবাহন চলাচলের পরিমাণ কম। অনেক পেট্রল পাম্প বন্ধ।
সড়ক অবরোধ রাজশাহীতে।
চট্টগ্রামে বাস না চালানোর অভিমত অধিকাংশ পরিবহন মালিকদের ।
রাঙামাটিতে গণপরিবহন বন্ধে ভোগান্তি।
হঠাৎ করে জ্বালানি তেলের দাম বাড়ার খবরে বেশির ভাগ বাস বন্ধ করে দিয়েছেন পরিবহন মালিক-শ্রমিকরা। রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন রাস্তা ঘাটে বাস চলাচল করলেও প্রতিজনের কাছ থেকে ৫-১০ টাকা করে বাড়তি ভাড়া নেয়ার অভিযোগ করেছেন যাত্রীরা।
বেশি ভাড়া আদায়ের কথা অবশ্য স্বীকার করছেন । যদিও এখন পর্যন্ত নতুন করে বাসভাড়া নির্ধারণ করে দেয়নি সরকার। বাসের সংখ্যা কম ও বেশি ভাড়া আদায়ের অভিযোগ করছেন সাধারণ যাত্রীরা।
অনেক জায়গায় দূর পাল্লার বাস চলাচল বন্ধ।
আবার ডিজেলের বাড়তি দামে বিপাকে কৃষকরা।
মোটকথা হঠাৎ করে জ্বালনির দাম বাড়াতে ভোগান্তিতে জনগন। বিপাকে চালক ও যাত্রীরা। দেশের বিভিন্ন স্থানে জনসমাবেশ ও বিক্ষোভ। অনেক ফিলিং স্টেশন বন্ধ।
সরকার ৫০ শতাংশের মতো দাম বাড়ানোর পরে হাজার হাজার বাংলাদেশি সারা দেশে জ্বালানি কেন্দ্র ঘেরাও করে, যা উচ্চতর তেলের দামের পিছনে সবচেয়ে বড় রেকর্ড।
নতুন নির্দেশনা না আসা পর্যন্ত জ্বালানি তেলের এই দাম বহাল থাকবে।
পরবর্তী আপডেট পেতে আমাদের সাথে থাকুন।