স্টুডেন্ট থেকে চাকরিজীবী পর্যন্ত যে কেউ মোবাইল দিয়ে ইনকাম করতে পারে। এর জন্য এডভান্স কোন অভিজ্ঞতার প্রয়োজন হয় না। বেসিক কিছু ধারণা থাকলেই খুব সহজে প্রতি মাসে 8 থেকে 15 হাজার টাকা পর্যন্ত ইনকাম করা যায়। শুধু দরকার একটি মোবাইল ডিভাইস এবং ইন্টারনেট কানেকশন।
ডিজিটাল যুগে ইন্টারনেট থেকে আয় করা যায় এ কথাটি আমরা সবাই জানি। অনেকেই প্রতি মাসে হাজার হাজার টাকা আয় করতেছে। সঠিক ধারণার অভাবে অনেকে ইনকাম করতে পারছে না। তাদের জন্যই মূলত আজকের এই পোস্ট, কেননা আজকে আমরা আলোচনা করব মোবাইল দিয়ে ইনকাম করার পদ্ধতি গুলো নিয়ে।
কিভাবে মোবাইল দিয়ে ইনকাম করবেন
মোবাইল দিয়ে আয় করা বেশ কিছু পদ্ধতি রয়েছে তার মধ্যে হচ্ছে:
- কনটেন্ট রাইটং
- ব্লগিং করে আয়
- ইউটিউব থেকে ইনকাম
- অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং
- মাইক্রো ওয়ার্ক জব
- অনলাইন টিউশন
- পণ্য বিক্রি
কনটেন্ট রাইটিং করে ইনকাম করার উপায়
লেখালেখির অভ্যাস থাকলে কনটেন্ট রাইটিং করে প্রতি মাসে ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা আয় করা কোন ব্যাপারই নয়। কারণ এর চাহিদা প্রতিনিয়ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিশেষ করে ইংরেজি কনটেন্ট রাইটিং এর চাহিদা বেশি। কনটেন্ট রাইটিং করে আয় করতে চাইলে প্রথমে ইউনিক আর্টিকেল এবং এসইও ফ্রেন্ডলি আর্টিকেল রাইটিং শিখতে হবে। এক থেকে দুই মাস চেষ্টা করলেই শিখতে পারা যায়। অনেক ব্লগাররা আর্টিকেল রাইটার হায়ার করে থাকে। এ ছাড়া ফাইবার, আপ ওয়ার্ক এর মত মার্কেটপ্লেসে কাজ করা যায়।
ব্লগিং করে আয় করার উপায়
ওয়েবসাইট সম্পর্কে বেসিক ধারণা থাকলে ব্লগ থেকে প্রচুর অর্থ উপার্জন করা যায়। একটি ওয়েবসাইট তৈরি করতে খরচ হয় দুই থেকে তিন হাজার টাকা। আপনার কনটেন্ট রাইটিং এর অভিজ্ঞতাও এখানে কাজে লাগাতে পারবেন। ব্লগে গুগল এডসেন্স যুক্ত করে আয় করা যায়। এজন্য কোয়ালিটি ফুল কনটেন্ট এবং ডিজাইন লাগে। ২০ থেকে ৩০ টি কোয়ালিটি ফুল কন্টেন্ট হলেই গুগল এডসেন্স অ্যাপ্রভাল পাওয়া যায়। ১০০ ডলার এডসেন্সে যুক্ত হলে তা বাংলাদেশের কিছু ব্যাংকের মাধ্যমে উইথড্র করতে পারা যায়।
Also Read: কিভাবে ব্লগিং থেকে ইনকাম করা যায় ২০২৩
ইউটিউব থেকে আয় করার উপায়
ইউটিউব থেকে আয় করতে করলে কেমন বেশি কিছুর প্রয়োজন হয় না। শুধুমাত্র ভিডিও তৈরি করতে পারলে এবং কিছু এডিট করতে পারলেই হয়ে যায়। মোবাইলের ক্যামেরা যদি ভাল হয় তাহলে যে কোন কিছু ভিডিও করে তা ইউটিউবে দিয়ে আয় করতে পারা যায়। তবে এক্ষেত্রে কিছু শর্ত আছে। ভিডিও গুলো যেন কপিরাইট ফ্রি হয় এবং কোয়ালিটি ভালো হয়। কপিরাইট কনটেন্ট দিলে ইউটিউব স্ট্রাইক দেয় যা চ্যানেলের জন্য ক্ষতিকর। বিগত এক বছরে ১ হাজার সাবস্ক্রাইবার এবং চার হাজার ঘন্টা ওয়াচ টাইম যদি পূরণ হয় তাহলে এডসেন্স এপ্রোভ পাওয়া যাবে। এছাড়া স্পনসরশিপ এফিলেট মার্কেটিং, প্রমোশন, রিভিউ এর মাধ্যমে আয় করা যায়।
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করার উপায়
কোন ধরনের অভিজ্ঞতা না থাকলেও অ্যাফিলেট মার্কেটিং থেকে ইনকাম করা যায়। অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং হচ্ছে নির্দিষ্ট কমিশনের ভিত্তিতে কারো পণ্য বা সার্ভিস বিক্রি করে দেওয়া। এমন অনেক অনলাইন প্লাটফর্ম রয়েছে যেখানে তারা তাদের পণ্য বা সার্ভিস কমিশন ভিত্তিতে বিক্রির জন্য লোক হায়ার করে। মনে করেন এক হাজার টাকার একটি পণ্য আপনাকে বিক্রি করে দিতে হবে এজন্য আপনাকে ১০% কমিশন দেবে। অর্থাৎ একটি পণ্য যদি আপনি বিক্রি করে দেন তাহলে ১০০ টাকা পাবেন। এগুলো অনলাইনেই মার্কেটিং করা যায় যার জন্য ঘরে বসে খুব সহজে এই কাজটি করা সম্ভব। বিভিন্ন ফেসবুক গ্রুপ, পেজ, ইমেইল মার্কেটিং এর মাধ্যমে অনেক সেল করা যায়। এর নির্দিষ্ট কোন বাঁধাধরা নেই এবং ইনকামের সীমাবদ্ধতা নেই।
মাইক্রো ওয়ার্ক জব
মাইক্রো ওয়ার্ক জব হচ্ছে কিছু কিছু টাস্কের বিনিময়ে নির্দিষ্ট অর্থ পাওয়া। মনে করেন আপনাকে একটি ইউটিউব চ্যানেলের লিংক দেওয়া হল সেখানে চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব করতে হবে। প্রমাণস্বরূপ তার একটি স্ক্রিনশট যাবে এবং এর বিনিময়ে আপনাকে পাঁচ থেকে দশ টাকা দেবে। এরকম ছোট ছোট কাজের মাধ্যমে আয় করা যায়। বর্তমানে মাইক্রো ওয়ার্ক জব এর চাহিদা অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। বেশ কয়েকটি মাইক্রোওয়েব সাইটের নাম গুলো হচ্ছে-
- মাইক্রো ওয়ার্কার্স
- পিকো ওয়ার্কার্স
অনলাইন টিউশন
বিশ্বে অনলাইন টিউশনের চাহিদা অনেক আগে থেকেও থাকলে আমাদের দেশে করোনার সময় থেকে এর প্রভাব বেশি পড়েছে। করোনা সময় মানুষ যখন ঘর থেকে বের হতে পারতো না তখন অভিভাবকরা তাদের ছেলেমেয়েদেরকে অনলাইন টিউশনে দিয়েছেন। তখন থেকেই আমাদের দেশে অনলাইন টিউশনের চাহিদা বৃদ্ধি পেয়েছে। আপনি যে বিষয়ে পারদর্শী সে বিষয়ে প্রথমে অনলাইনে বিজ্ঞাপন দিতে হবে। দেখা যায় ১৫ থেকে ২০ টি বিজ্ঞাপন দিলে একটি টিউশন পাওয়া যায়। এভাবেই অনলাইন টিউশন থেকে ইনকাম করা যায়।
পণ্য বিক্রি
অনলাইন হোক আর অফলাইন হোক যেকোনো ধরনের পণ্য বা সার্ভিস অনলাইনে বিক্রি করা যায়। এছাড়া ব্যবহৃত পণ্য বিক্রি করে প্রচুর অর্থ আয় করা যায়। যেমন ফেসবুকে একটি পেজ খুললে সেখানে পণ্যের বিজ্ঞাপন দিতে পারেন। এজন্য ফেসবুক পেজের ফলোয়ার এবং রিচ বাড়াতে হবে। ফলোয়ার যত বাড়বে তত মানুষের কাছে পণ্যের বিজ্ঞাপন পৌঁছাবে। আর এভাবে পণ্য বিক্রি বৃদ্ধি পাবে। তাছাড়া bikroy.com এর মাধ্যমেও পণ্য বিক্রি করা যায় প্রচুর পরিমাণে। এজন্য প্রথমে bikroy.com এ একটি একাউন্ট খুলতে হবে তারপর অন্যের বিস্তারিত দিয়ে পোস্ট করতে হবে।
সাবধানতা: মোবাইলের মাধ্যমে ইনকামের প্রলোভন দেখিয়ে অনেক অসাধু মানুষ অনেকের থেকে টাকা হাতে নেয়। এগুলো থেকে সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। কোন কাজের জন্য কোন সাইটে ইনভেস্টমেন্ট করা যাবে না।
Blogging Related Content:
Also Read: কিভাবে ফ্রি ওয়েবসাইট তৈরি করবেন ব্লগারে
Also Read: বাংলাদেশের সেরা ১০টি হোস্টিং সার্ভিস
Also Read: ১০ টি ফ্রি সেরা ব্লগার থিম ও টেমপ্লেট
Also Read: ১০টি সেরা হোস্টিং সার্ভিস
Also Read: ১০টি সেরা ফ্রি ওয়ার্ডপ্রেস থিম