আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস রচনা বা একুশে ফেব্রুয়ারি রচনা

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস রচনা: “আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি আমি কি ভুলিতে পারি” আজকে আপনাদের কাছে International Mother Language Day Essay টি শেয়ার করব আশা করি এই মাতৃভাষা দিবস রচনা পড়ার দ্বারা বাংলাদেশের মাতৃভাষা দিবস সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন এবং সকল পরিক্ষায় এই রচনাটি লিখতেও সহজ হবে।

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস রচনা

ভূমিকা:

সূচনা: বাঙালি র ইতিহাসে এক গৌরবময় ও ঐতিহ্য বাহী দিন হলো আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। বাঙালির জাতীয় জীবনে সকল চেতনার উৎস হচ্ছে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। মাতৃভাষা বাংলাকে রাষ্ট্রভাষার মর্যাদায় প্রতিষ্ঠিত করার সংগ্রাম এ একটি ঐতিহাসিক দিন আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস।

মাতৃভাষার সংজ্ঞা:

মাতৃভাষার সংজ্ঞা: ভাষার মাধ্যমে মানুষ মনের ভাব প্রকাশ করে । বিশ্বের প্রতিটি জাতির রয়েছে নিজস্ব ভাষা ও সংস্কৃতি। একটি শিশু জন্মের পর মায়ের মুখের কথা শুনে শুনে সে প্রথম কথা বলতে শেখে।আর সেটিই তার মাতৃভাষা। বাঙালিদের মাতৃভাষা বাংলা, ইংরেজিদে মাতৃভাষা ইংরেজি ইত্যাদি।

মানবজীবনের মাতৃভাষা ভূমিকা:

মানবজীবনের মাতৃভাষা ভূমিকা: প্রতিটি মানুষের জীবনে মাতৃভাষার ভূমিকা অসীম। মাতৃভাষায় একটি শিশু তার মনের  ভাব প্রকাশ করতে শেখে।

এ ভাষাতেই মানুষ লেখন লিখে, এক হৃদয় এর ভাব ভালোবাসা অন্য হৃদয়ে প্রদান করে। মাতৃভাষার মাধ্যমে যতটা সহজ ভাবে মনের ভাব প্রকাশ করা যায় অন্য কোন ভাষায় তা অকল্পনীয়। সুতরাং মানব জীবনে মাতৃভাষার ভূমিকা অপরিহার্য।

বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ রচনা

বাংলা ভাষার ইতিকথা:

বাংলা ভাষার ইতিকথা: “যে হবে বঙ্ঘেতে জন্মি হিংসে বঙ্ঘবানী, সে সব কাহার জন্ম নির্ণয় ন জানি”

বাংলা ভাষার ইতিহাস খুব বেশি দিনের নয়।প্রায় এক হাজার বছর থেকে বারোশত বছর আগে রচিত বৌদ্ধ সহজিয়াদের চর্যাগীতিকায় বাংলা ভাষার প্রাচীন নিদর্শন পাওয়া গেছে।

ভাষা আন্দোলনের পটভূমি

ভাষা আন্দোলনের পটভূমি: ১৯৪৭ সালের ১৪ই আগষ্ট পাকিস্তান রাষ্ট্রের উদ্ভব হয়। পূর্ব বাংলাকে পাকিস্তানের অন্তর্ভুক্ত করা হয় । বাংলা ভাষা এবং বাঙালি সংস্কৃতির প্রতি চরম অবজ্ঞা পোষন করে সেদিন বাঙালি জাতিকে নতুন করে যে পরাধীনতার শিকলে বন্দি করা হয় তার পরিণাম খুব ই ভয়াবহ। বাংলার দামাল ছেলেরা  মায়ের ভাষার মর্যাদা রক্ষার জন্য শপথ গ্রহণ করে। পূর্ব বাংলার সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ে ঐতিহাসিক ভাষা আন্দোলনের।

১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের:

১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের: ১৯৪৮ সালের একুশে মার্চ রেসকোর্সের ময়দানে জিন্নাহ সাহেব উর্দুকে রাষ্ট্রভাষা ঘোষণা করলে ছাত্র জনতা বিক্ষোভ এ ফেটে পড়ে। শুরু হয় মিছিল মিটিং  তার পর ১৪৪ ধারা জারি করে ২১ এ ফেব্রুয়ারিতে সকল মিছিল মিটিং নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। কিন্তু বাংলার দামাল ছেলে ১৪৪ধারা ভঙ্ঘ করে মিছিল বের করে , মিছিলে পুলিশ নির্বিচারে গুলি চালায়, শহীদ হন

সালাম, বরকত , রফিক জব্বার সহ আরো অনেক।

১৯৫৬ সালের স্বীকৃতি:

১৯৫৬ সালের স্বীকৃতি: ১৯৫২ সালের ২১ফেব্রুয়ারীতে নির্মম হত্যাকাণ্ডের সংবাদ সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ে।সারা দেশ বিক্ষোভ এ ফেটে পড়ে,এ অবস্থায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সরকার রাষ্টপ্রধান গন পাকিস্তান কতৃপক্ষ কে পূর্ব বাংলার ভাষার দাবি মেনে নেয়ার জন্য অনবরত চাপ দিতে লাগল। ফলে ১৯৫৬ সালে র সংবিধান এ পাকিস্তান সরকার বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দিতে বাধ্য হয়।

একুশের প্রভাব:

একুশের প্রভাব: ভাষা আন্দোলনের মাধ্যমে বাঙালি জাতির মধ্যে চেতনার সৃষ্টি হয়।একুশে ফেব্রুয়ারি র তাৎপর্য শহীদ দিবস পালন এর মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে নি।তা বাঙালির জাতীয় জীবনে সর্বত্র প্রভাব বিস্তার লাভ করেছে যা আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃত।

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের স্বীকৃতি

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের স্বীকৃতি: ১৯৯৯সালের ১৭ নভেম্বর ফ্রান্সের প্যারিসে ইউনেস্কোর সাধারণ পরিষদ ২১ শে ফেব্রুয়ারি কে ” আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস” হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে।

আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির উদ্যোগ:

আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির উদ্যোগ: একুশে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে পরিনত করার প্রথম উদ্যোগতা কানাডা প্রবাসী বাংলাদেশী রফিকুল ইসলাম। তাঁরই ই উৎসাহে শিক্ষামন্ত্রীর নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল ৯ই সেপ্টেম্বর ৯৯ প্রস্তাব টি ইউনেস্কো দপ্তর এ আনুষ্ঠানিক ভাবে পেশ করেন।

আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি লাভ:

আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি লাভ: একুশে ফেব্রুয়ারি এখন শুধু আমাদের মাতৃভাষা নয়। প্রতিবছর একুশে ফেব্রুয়ারি সারা বিশ্বে পালিত হচ্ছে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে।

বাংলাদেশ এ দিবসটির গুরুত” আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি আমি কি ভুলিতে পারি”

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের গুরুত্ব অপরিসীম। বাঙালির যেসব অর্জন রয়েছে সবচেয়ে প্রধান অর্জন আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস।”আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস আমাদের গর্ব আমাদের অহংকার।

আমাদের করনীয়:

আমাদের করনীয়: বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বিশ্বাস করতেন ” আগে চাই বাংলার গাঁথুনি , তারপর ইংরেজি শেখার পত্তন” এ কথাটির তাৎপর্য রয়েছে ” মাতৃভাষা র গুরুত্ব আরোপ এর মধ্যে।

উপসংহার:

উপসংহার:” ছেলে হারা মায়ের অশ্রু গড়া এ ফেব্রুয়ারি আমি কি ভুলিতে পারি” আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস আমাদের জাতীয় জীবনের অহংকার আমাদের গর্ব।আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস এ শ্রদ্ধা জানাই  সেই শহীদের যারা আমার চেতনাকে রক্তে রাঙিয়ে দিয়েছে।

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস রচনাটি আপনাদের কেমন লাগলো জানাবেন কমেন্ট করে, আমরা সবসময় চেষ্টা করি‌ সহজে সব কিছু দেওয়ার যেমন এইচএসসি, এসএসসি গাইড পিডিএফ ফাইল, এনটিআরসিএ পরীক্ষা বিষয়ক সকল তথ্য, তাই আপনারা আমাদের সাথেই থাকবেন আমরা আরোও এরকম রচনা শেয়ার করব যাতে করে মোবাইলের মাধ্যমে আপনার সব রচনা পড়া হয়ে যায়। আর শেয়ার করতে ভুলবেন না। ধন্যবাদ

HM Mahfuj

Mahfujur Rahman is the founder of this Blog. He is a Professional Blogger and SEO Expert, who is interested in SEO, Web Programming. If you need any information related to this website, then you can feel free to ask here. It is our aim that you get the best information on this blog.

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button