আল্লামা অহমদ শফি রহঃ চলে গেলেন না ফেরার দেশে১৮ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যা ৬:২০ মিনিটে রাজধানীর আজগর আলী হাসপাতালে বাংলার আনাচে-কানাচে ছড়িয়ে পড়া লাখো উলামায়ে কারামের মাতার তাজতুল্য ব্যক্তিত্ব আল্লামা অহমদ শফি পাড়ি জামান না ফেরার দেশে।শোকে কাতর সাড়া বাংলার আলেম সমাজ।
আহমদ শফি রহ: ছিলেন এদেশের হাজারো ইসলাম প্রেমীর আধ্যাত্মিক জগতের রাহবার ও ওলামা-কেরামের ঐক্যের প্রতীক।তিনি উলামা-মাশায়েখের মাতার মুকুট ছিলেন।তিনি ছিলেম মদনী র. অনুমতি প্রাপ্ত শেষ খলিফা।কারণ মদনী র. সে বছরই মাওলার সান্নিধ্যে চলে যান।
জন্ম:
আল্লামা শাহ আহমদ শফি র. আহমদ শফি নামে আপামর জনতার কাছে অধিক পরিচিত ছিলেন । পিতা বরকত আলি ও মাতা মেহেরুন্নেছার ঘর আলোকিত করে এই ধরা পৃষ্টে আগমন করেন।তিনি১৯১৬ সালে চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া থানার অধীনস্থ পাখিয়ারটিলা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।
শিক্ষা জীবন:
আহমদ শফীর শিক্ষাজীবন শুরু হয় রাঙ্গুনিয়ার সরফভাটা মাদ্রাসায়। তিনি ১০ বছর বয়সে হাটহাজারী মাদ্রাসায় ভর্তি হন।১০ বছর হাঠহাজারী মাদরাসায় ইলম অর্জন করেন।তার পর ২০ বছর বয়েসে ১৯৪১ সালে তিনি ভারতীয় উপমহাদেশের ইলমি মারকায নামে খ্যাত দারুল উলুম দেওবন্দ মাদ্রাসায় ভর্তি হন। সেখানে তিনি চার বছর হাদিস, তাফসির, ফিকাহ শাস্ত্র অধ্যয়ন করে দাওরায়ে হাদিস সমাপ্ত করেন।
খেলাফত লাভ:
শায়খুল আল্লামা হুসাইন আহমদ মদনী রহ. এর হাতে বয়াত গ্রহন করেন। অল্প বয়েসেই তিনি খেলাফত প্রাপ্ত হন।
কর্ম জীবন:
• ১৯৪৬ সালে দারুল উলুম হাটহাজারীতে শিক্ষক হিসেবে নিযুক্ত হন।
• ১৯৮৬ সালে প্রতিষ্ঠানের মজলিসে শূরার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মহাপরিচালক পদে দায়িত্ব পান।৩৪ বছর ধরে তিনি এই পদে ছিলন।
• পরবর্তী সময়ে শায়খুল হাদিসের দায়িত্বও তিনি পালন করেন।
• ২০০৮ সালে তিনি কওমি মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড-বেফাকের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন।
• ২০১০ সালের ১৯ জানুয়ারি দারুল উলুম হাটহাজারী মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত ওলামা সম্মেলনে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ গঠন করা হয়। তিনিই এর প্রতিষ্ঠাতা আমির মনোনীত হন।
• ২০১১ সালে তিনি জাতীয় নারী নীতির বিরুদ্ধে জোরাল কণ্ঠস্বর তুলেন।
• তার নেতৃত্বে ২০১৩ সালের “শাপলা ট্রাজেডি” এর জন্য তিনি চিরদিন আমাদের মাঝে স্মরণীয় হয়ে থাকবেন।
•তিনি বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়ার চেয়ারম্যানও ছিলেন।
আল্লামা আহমদ শফী রহ. এক নজর দেখার জন্য লাখো মানুষের ঢল:
দেশের সর্বজন শ্রদ্ধেয় আলেম আল্লামা আহমদ শফী রহ. এক নজর দেখার জন্য লাখে মানুষের ঢল নামে দারুল উলুম হঠহাজারি মাদরাসা।সকাল থেকে জড়ো হতে থাকেন জানাযায় শরিক হওয়ার ইচ্ছুক জনতা।
১৯ সেপ্টেম্বর বেলা দুই ঘটিকায় তার বড় ছেলে মাওলানা ইউসুফ মদনির ইমামতিতে জানাযার নামাজ সম্পন্ন করা হয়।নমাজে লাখে জনাতার ঢল মাদরাসার মাঠ সহ আশেপাশের এলাকা ছড়িয়ে যায়।
সর্বজনের ভালবাসায় সিক্ত আহমদ শফী রহ. দাফন করা হয় মাদরাসার মসজিদ সংলগ্ন মাকবারায়ে আতিক নামক কবর স্হানে।