হজ্জ করার নিয়ম? ও কিভাবে হজ্জ পালন করবেন? হজ্জের নিয়ম কানুন কি? এসব বিষয় অনেকে জানতে চান। আমরা আজ সে সব বিষয় আলোচনা করব।
হজ্জ ইসলামে পাঁচ স্তম্ভের মধ্যে ৪র্থ। হজ্জ একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। হজ শারিরীক ওবদৈহিক ইবাদত। অন্যান্য ইবাদত থেকে হজ তুলনামূলক কঠিন একটি ইবাদত।
হজ্জ করার নিয়ম।
হজ্জ কিভাবে করতে হয়? আমরা হজ্জ কিভাবে আদায় করতে হয়, তা বলব। হজের নিয়ম কনুন বেশ বিস্তর। আর হজ অন্যন্য ইবাদতের ন্যায় বরংবার করা হয় না বিধায় হজের নিয়ম কানুন অজানা থেকে যায়।
হজ্জের ফরজসমূহ।
হজ্জ করার আগে জানতে হবে হজ্জের ফরজ সমূহ।
হজের ফরজ ৩টি।
১। ইহরাম বাঁধা। হজ করতে হলে প্রথমে আপনাকে ইহরাম বাধতে হবে। নির্দিষ্ট মিকাত অতিক্রম করার পূর্বে ইহরাম বাধতে হয়। যদি ইহরাম না বাধেন তাহলে হজ শুদ্ধ হবে না। এটা হলো হজ্জের প্রথম ফরজ। বাংলাদেশের হজ্জ যাত্রী যদি সরাসরি মক্কায় যায় তাহলে ঢাকা থেকে বিমানে উঠে ইহরাম বাধবে। কারণ বাংলাদেশের মিকাত হলো ইয়ালামলাম। আর জিদ্দায় ল্যান্ড করলে ইয়ালামলাম মিকাত অতিক্রম করা হয়। এতে গুনাহগার ও কাফ্ফারা দিতে হয়।
২। উ’কুফে আ’রাফা। অর্থাৎ আরাফাতের ময়দানে অবস্থান করা। আরাফার ময়দানে ৯ যিলহজ্জ আবস্হান করতে হয়। এটা হজের ২য় ফরজ।
৩। তাওয়াফুয যিয়ারাত।
আরোও পড়ুন: এবছর হজ্জের যাত্রী কতজন?
হজ্জের ওয়াজিব সমূহ
হজ্জের ওয়াজিব ৬টি। এই ছয়টি ওয়াজিব পালন করতে হয়। পালন না করলে গুনাহগার হতে হবে।
১। মুজদালিফায় অবস্হান
২। সাফা ও মারওয়া সায়ী করা ।
৩। জামরায় শয়তানকে পাথর নিক্ষেপ করা।
৪। তামাত্তু ও কিরান হাজীগণের ক্ষেত্রে কোরবানি করা,
৫। মাথার চুল কাটা
৬। তাওয়াফে বিদা বা বিদায়ী তাওয়াফ করা
৭। নবী (সা.) কবর যিয়ারত করা।
হজের প্রকারভেদ।
হজ্জের ও প্রকার রয়েছে। হজ তিমটি পদ্ধতিতে আদায় করা যায়। হজ তিন প্রকার। আপনি কোন হজ্জ করবেননতা নির্ধারণ করুন। প্রত্যেক হজ্জের নিয়তে কিছু পার্থক্য রয়েছে।
- কেরান।
- ইফরাদ।
- তামাত্তু।
কেরান হজ্জের নিয়ম।
কেরান মানে একত্রিত করা। হজ ও উমরাকে একসাথে একত্রিত করে হজ আদায় করাকে কেরান হজ বলে। বাংলাদেশের হাজীরা স্বাধারণত কিরান হজ পালন করে।
কেরাম হজের নিয়ম হলো, প্রথমে হাজিকে কেরান হজের নিয়ত করতে হবে। তা মিকাত অতিক্রম করার পূর্বে ইহরাম বাধার সময় এ নিয়ত করতে হবে। হে! আমি হজ ও উমরা করছি, আপনি আমার জন্য সহজ করে দিন। হজ আদায় কারীকে মনে রাখতে হবে, হজ ও উমরা আদায় করাট পর তিনি ইহরাম থেকে মুক্ত হবেন। তাছাড়া হজের নিষিদ্ধ কাজ সমূহ থেকে বিরত থাকতে হবে। উমরার তাওয়াফ আগে করলে ইযতিবা ও রমলসহ তাওয়াফ করতে হবে।
সায়ী কারতে হয়।
কিরানকারীর তাওয়াফে কুদুম করা সুন্নত। ৭ তারিখের খুতবা মনোযোগ দিয়ে শুনা। ৮ জিলহজ জোহরের পূর্বে মিনায় অবস্হান করা। আরাফয় অবস্থান করতে হবে। তারপর মুজদালিফায় অবস্হান। পাথর নিক্ষপ। বিদায়ী তাওয়াফ ইত্যাদি করতে হয়।
হজ্জে তামাত্তু করার নিয়ম।
হজ্জে তামাত্তু হলো ১ম উমরার নিয়ত করে উমরা হজ্জ আদায় করা, তারপর ইওমু তাসরিক বা ৮ জিলহজ উমরা শেষ করে হজ সম্পাদন করাকে হজে তামাত্তু বলে।
উমরার নিয়ত করে মিকাত অতিক্রম করার পূর্বে ইহরাম বাধবে। তারপর তালবিয়া পাঠ করবেন। লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাঈক, লাব্বাইকা লা শারিকা লাকা লাব্বাইক, ইন্নাল হামদা ওয়ান নিকমাতা, ওয়াল মুলকা লাক লাব্বাইক।
উমরার তাওয়াফ করা, ইজতিবা সহ অযু সহকারে তাওয়াফনকরতে হয়।
ইজতিবদ কী?
ইজতিবা হলো তাওয়াফের কাপড় ডান বগলের নিচের দিক থেকে পেঁচিয়ে নিয়ে এসে বাম দিকের কাঁধের ওপর রাখাকে ‘ইজতিবা’ বলে।
রুকনে ইয়ামনি থেকে তাওয়াফ শুরু করতে হয়।
তাওয়াফের দুই রাকাত নামজা আদায় করা। এই দুই রাকাত নামজ ওয়াজিব।সাফা মারওয়া পাহাড়দ্বয়ে সায়ী করা। এটা ওয়াজিব।তারপর হলক করে উমরা শেষ করা।
তারপর হজের কার্যক্রম শুরু করা। মিনা, আরাফা ও মুজদালিফায় আবস্হন। জমরায় পাথর নিক্ষেপ করা। উপরে যেভাবে বর্ণিত হয়েছে, সেভাবে সবগুলো এক এক করা আদায় করলেই হজ্জ সম্পদন হয়ে যাবে।
হজ্জের তালবিয়া
তালবিয়া একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হজ্জের। ইহরাম বাধার পর থেকে তালবিয়া পাঠ করতো হয়।
তালবিয়া আরবি
لبيك اللهم لبيك، لبيك لا شريك لك لبيك، ان الحمد والنعمة لك و الملك لا شريك لك.
তালবিয়ার বাংলা উচ্চারণ
লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাঈক, লাব্বাইকা লা শারিকা লাকা লাব্বাইক, ইন্নাল হামদা ওয়ান নিকমাতা, ওয়াল মুলকা লাক লাব্বাইক।