আলহামদুলিল্লাহ অর্থ কি? মুসলিমরা কথা বলার সময় প্রায় সময় আলহামদুলিল্লাহ, সুবহানাল্লাহ ও ইনশাআল্লাহ বলে থাকে। এটা এক ধরণের সৌন্দর্য। আল হামদুলিল্লাহ অর্থ কী? আলহামদুলিল্লাহ বলার ফজিলত কি? কখন আলহামদুলিল্লাহ বলতে হয়? কখন আলহামদুলিল্লাহ বলতে হয় না। ইত্যাদি বিষয় নিয়ে আমরা আজ আলোচনা করব।
আলহামদুলিল্লাহ অর্থ কি?What’s the meaning of Al hamdulillah?
আলহামদুলিল্লাহ (ٱلْحَمْدُ لِلَّٰهِ, al hamdulillah) একটি আরবি শব্দ। “আলহামদুলিল্লাহ ” শব্দের মধ্যে দুইটি অংশ রয়েছে। “আলহামদুলিল্লাহ” একটি প্রশংসা জ্ঞাপক শব্দ। আল হামদুলিল্লাহ বলে আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করা হয়।
১ম অংশ “আল হামদু”, যার অর্থ হলো প্রশংসা। অর্থাৎ সকল ধরণের প্রশংসা। “লিল্লাহ” অর্থ আল্লাহর জন্য। সুতরাং আল হামদুলিল্লাহ অর্থ সকল ধরণের প্রশংসা আল্লাহর জন্য। আল হামদুলিল্লাহ বলে কখনো কখনো আল্লাহকে ধন্যবাদ জানানো হয়।
আশাকরি আলহামদুলিল্লাহ অর্থ ক্লিয়ার হয়েছে। দৈনিক আমরা কয়েকটি আরবি শব্দ সব সময় বলে থাকি আল হামদুলিল্লাহ হলো তার একটি। চলুন আল হামদুলিল্লাহ এর যে অর্থ জানলাম সে অনুপাতে মনের গহীন থেকে “আল হামদুলিল্লাহ বলি”।
আলহামদুলিল্লাহ কখন বলব?
আমরা জানি না কখন “আল হামদুলিল্লাহ” বলতে হয়। অনেক সময় “ইনশাআল্লাহ” বলার জায়গায় “আল হামদুলিল্লাহ” বলে ফেলি। কখন “জাযাকাল্লাহ” বলার জায়গায় “আল হামদুলিল্লাহ” বলি। কখনো বা “সুবহানাল্লাহ” বলার জায়গায় “আল হামদুলিল্লাহ” বলে ফেলি। আসলে আমরা জানি না কোনটার অর্থ কি, সেজন্য আমরা বিপাকে পড়ি। একটার স্হানে অন্যটি বলে ফেলি। “আলহামদুলিল্লাহ” অর্থ সকল প্রশংসা আল্লাহ তায়ালার। “আল হামদুলিল্লাহ” কখন বলতে হয় তা নিচে তুলে ধরা হলো।
- যখন খুশির সংবাদ শুনা হয় তখন আল হামদুলিল্লাহ বলতে হয়।
- যখন কেউ আপনাকে কেমন আছেন বলবে? তখন আল হামদুলিল্লাহ ভালো আছি বলবেন।
- তাছাড়া হাচি দিলে আলহামদুলিল্লাহ বলতে হয়। বক্তব্য দেওয়ার আগে আলহামদুলিল্লাহ বলে শুরু করতে হয়।
Al-hamdulillah এর জবাবে কি বলতে হয়।
যখন কেউ হাচি দেয়, তখন তার জন্য উচিত হলো “আল হামদুলিল্লাহ” বলা। কেউ যদি হাচি দেওয়ার পর উচ্চ শব্দে “আল হামদুলিল্লাহ” বলে। আর উপস্থিত ব্যক্তি তা শুনে তাহলে “আলহামদুলিল্লাহ” এর জবাব দিতে হয়। জবাবে “ইয়াহদিকুমুল্লাহ” বলতে হয়।
আলহামদুলিল্লাহ এর ফজিলত।
আল হামদুলিল্লাহ এর ফজিলত অনেক বেশি। একবার আল হামদুলিল্লাহ বললে কিয়ামতের দিন মিজানের পাল্লা ভারি হবে। যেন হাদিসে এসেছে, রাসুল সা. বলেন।
১, ‘আলহামদুলিল্লাহ’ মিজানের পাল্লাকে ভারি করে দেয় এবং এটা সর্বোত্তম দোয়া। (তিরমিজি)।
২. রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: “সুব্হানাল্লাহ, আলহামদুলিল্লাহ, লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ, আল্লাহু আকবার পাঠ করা যা কিছুর উপর সূর্য উদিত হয়েছে সবকিছু থেকে আমার নিকট অধিক প্রিয়।” মুসলিম–২৬৯৫
আলহামদুলিল্লাহ বলার গুরুত্ব।
আমাদের জীবনে আল্লাহর দেওয়া নিয়ামতে ভরপুর। আমরা আল্লাহর অগণিত নিয়ামতে ডুবে থাকে। যদি আমরা তার কৃতজ্ঞতা পূরণ কটতে চাই পারবানা। এ ব্যাপারে পবিত্র কোরআনে এসেছে, “তোমরা আল্লাহর নিয়ামতরাজি গণনা করে শেষ করতে পারবে না” [সূরা: আন-নাহল, আয়াত: ১৮]
আল্লাহ তায়লা আমাদেরকে কৃতজ্ঞতার নিয়ম শিখিয়েছেন। নিয়ামতের কৃতজ্ঞতা আদায়ের একটি সহজ নিয়ম হলো, মুখে ‘আলহামদুলিল্লাহ’ বলা। আল্লাহর অনুগ্রহ যে তিনি তাঁর অগণিত নিয়ামতের কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপনের জন্য ছোট একটি বাক্য নির্ধারণ করেছেন, যাতে মানুষ সহজেই অধিক পরিমাণ কৃতজ্ঞতা আদায় করতে পারে।
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “আলহামদুলিল্লাহ মিজানের পাল্লাকে ভারী করে এবং এটি সর্বোত্তম দোয়া।
শুধু তাই নয় জান্নাতের মধ্যে আল হামদুলিল্লাহ বাক্য থাকবে। মুমিনের বিষয় আশ্চর্যজনক। তার বিপদ-আপদ সর্বক্ষেত্রে আল্লাহর কৃতজ্ঞতা প্রকদশ করে।
আলহামদুলিল্লাহ এর হাদিস।
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “আলহামদুলিল্লাহ মিজানের পাল্লাকে ভারী করে এবং এটি সর্বোত্তম দোয়া।
আলহামদুলিল্লাহ আরবি।
আল হামদুলিল্লাহ এর আরবি লেখা
ٱلْحَمْدُ لِلَّٰهِ
আলহামদুলিল্লাহ আলা কুল্লি হাল।
রাসুলুল্লাহ সা যখন কষ্টের মধ্যে থাকতেন তখন “আলহামদুলিল্লাহ আলা কুল্লি হাল” বলতেন। “আলহামদুলিল্লাহ আলা কুল্লি হাল” এর অর্থ – “সর্ব অবস্থায় আমি আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করছি”।
আল হামদুলিল্লাহ সুরা।
অনেকে সুরা ফাতিহা কে আলহামদুলিল্লাহ সুরা বলে থাকেন। কেননা উক্ত সুরার প্রথম বাক্য আল হামদুলিল্লাহ।
আল হামদুলিল্লাহ ভালো আছি।
কেউ যদি কাউকে বলে- কেমন আছেন? তখন আমরা বলি আল হামদুলিল্লাহ ভালো আছি। এটা একটা বিনয়, নিয়ম। আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ। আল্লাহর দয়া রহমতে ভালো আছি। বএটা প্রকাশ করার জন্য “আলহামদুলিল্লাহ” বলা হয়।
আশাকরি আল হামদুলিল্লাহ সম্পর্কে আপনারা জানতে পেরেছেন। আসুন আমরা আল্লাহর শিখানো কৃতজ্ঞতা সূচক বাক্য আদায় করি।