আস্তাগফিরুল্লাহ অর্থ কি | আস্তাগফিরুল্লাহ উপকারিতা | Astaghfirullah Meaning in Bengali

আস্তাগফিরুল্লাহ অর্থ কি? আস্তাগফিরুল্লাহ এর উপকারিতা কিঃ আস্তাগফিরুল্লাহ একটি তাওবার বাক্য। এর দ্বারা বান্দা আল্লাহর কাছে অনুতপ্ত হয়। কৃত অপরাধ মাপের অন্যতম মাধ্যম আস্তাগফিরুল্লাহ।  ইসলামের গুরুত্বপূর্ণ কিছু টার্মের মধ্যে আস্তাগফিরুল্লাহ অন্যতম। আমরা আস্তাগফিরুল্লাহ দৈনিক জীবনে বারবার ব্যবহার করে থাকি। সেজন্য আস্তাগফিরুল্লাহ কি? কি তার ফজিলত? আমাদের জীবনে কি প্রয়োজন? কখন আস্তাগফিরুল্লাহ বলতে হয়? ইত্যাদি বিষয় জানা অতীব দরকার। আজ আমরা আস্তাগফিরুল্লাহ নিয়ে আলোচন করব।

ইস্তেগফার বা আস্তাগফিরুল্লাহ  কি?

আস্তাগফিরুল্লাহ একটি আরবি বাক্য। আনরা যা দৈনিক জীবনে ব্যবহার করে থাকি। এটা একটি অনুশোচনামূলক বাক্য। বান্দা আস্তাগফিরুল্লাহর মাধ্যমে আল্লাহর কাছ স্বীয় অপরাধমোচনে ক্ষমাপ্রার্থী হয়। আর ইস্তেগফার অর্থ ক্ষমা প্রার্থনা করা। ইস্তেগফার আরবি ক্রিয়া আা ভার্ব।

আস্তাগফিরুল্লাহ অর্থ কি।

আস্তাগফিরুল্লাহ একটি বাক্য। আরবি বাক্য। আস্তাগফিরুল্লাহর দুইটি অংশ। একটি হলো “আস্তাগফিরু” যার অর্থ আমি ক্ষমা প্রার্থনা করছি।

অপরটি হলো আল্লাহ।  আল্লাহ ত আমাদের পালনকর্তার নাম। সুতরাং আস্তাগফিরুল্লাহর অর্থ দাড়ায় —  “আমি আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করছি”।

আস্তাগফিরুল্লাহ অর্থ কি

আস্তাগফিরুল্লাহর মূল আরবি।

আস্তাগফিরুল্লাহর মূল আরবি ও অর্থ নিচে দেওয়া হলো।

أَسْتَغْفِرُ اللَّهَ الَّذِي لاَ إِلَهَ إِلاَّ هُوَ الْحَىُّ الْقَيُّومُ وَأَتُوبُ إِلَيْهِ

উচ্চারণ :

‘আস্তাগফিরুল্লাহ হাল্লাজি লা ইলাহা ইল্লা হুয়াল হাইয়ুল কাইয়ুম ওয়াতুবু ইলাইহি।’

অর্থ:

 আমি আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করছি। যিনি ছাড়া ইবাদতের আর কোন যোগ্য উপাস্য নেই। যিনি চিরঞ্জীব ও চিরস্থায়ী। আমি তাঁর কাছে তাওবা করছি।

সাইয়েদুল ইস্তেগফার।

।اَللَّهُمَّ أَنْتَ رَبِّىْ لآ إِلهَ إلاَّ أَنْتَ خَلَقْتَنِىْ وَأَنَا عَبْدُكَ وَأَنَا عَلى عَهْدِكَ وَوَعْدِكَ مَا اسْتَطَعْتُ، أَعُوْذُبِكَ مِنْ شَرِّمَا صَنَعْتُ،   أبُوْءُ لَكَ بِنِعْمَتِكَ عَلَىَّ وَأَبُوْءُ بِذَنْبِىْ فَاغْفِرْلِىْ فَإِنَّهُ لاَيَغْفِرُ الذُّنُوْبَ إِلاَّ أَنْتَأَنْتَ

সাইয়েদুল ইস্তেগফার বাংলা উচ্চারণ।

আল্লা-হুম্মা আনতা রাব্বী, লা ইলা-হা ইল্লা আনতা খালাক্বতানী, ওয়া আনা ‘আবদু, ওয়া আনা ‘আলা ‘আহদিকা ওয়া আ‘দিকা মাসতাত্বা‘তু, আ‘ঊযুবিকা মিন শার্রি মা ছানা‘তু। আবূউ লাকা বিনি‘মাতিকা ‘আলাইয়া ওয়া আবূউ লাকা বিযাম্বী, ফাগফিরলী ফাইন্নাহূ লা ইয়াগফিরুয্ যুনূবা ইল্লা আনতা।

সাইয়েদুল ইস্তেগফারে অর্থ।

হে আল্লাহ! তুমি আমার পালনকর্তা। তুমি ছাড়া  কোন মাবুদ নেই। তুমি আমাকে সৃষ্টি করেছ। আমি তোমার দাস। আমি আমার সাধ্যমত তোমার নিকটে দেওয়া অঙ্গীকারে ও প্রতিশ্রুতিতে দৃঢ় আছি। আমি আমার কৃতকর্মের অনিষ্ট হ’তে তোমার নিকটে আশ্রয় প্রার্থনা করছি। আমি আমার উপরে তোমার দেওয়া অনুগ্রহকে স্বীকার করছি এবং আমি আমার গোনাহের স্বীকৃতি দিচ্ছি। অতএব তুমি আমাকে ক্ষমা কর। কেননা তুমি ছাড়া পাপসমূহ ক্ষমা করার কেউ নেই’।

 

ইস্তেগফার (আস্তাগফিরুল্লাহ) বলার উপকার বা ফায়দা।

আস্তাগফিরুল্লাহ বলার অনেক উপকার রয়েছে। নিচে কিছু উপকারের কথা উল্লেখ করা হলো

  • অধিক আস্তাগফিরুল্লাহ বলার কারণে প্রচুর বর্ষণ হয়। ফলে বাগান ও শস্যে ভালো ফসল হয়। নদী-নালা থাকে জারি, পানির অভাব মিঠায়।
  • ইস্তিগফারকারীকে আল্লাহ উত্তম সন্তান দান করেন
  • উত্তম সম্পদ ও জীবিকার দ্বারা সম্মানিত করেন।
  •  দীন পালন সহজ হয়।
  • কর্মজীবন হয় সুখের।
  •  আল্লাহ ও বান্দার মাঝে যে দূরত্ব ঘুচে যায়।
  • ইস্তিগফারকারীর কাছে দুনিয়াকে খুব নগন্য  করে দেয়া হয়।
  •  মানব ও জীন শয়তান থেকে তাকে হিফাযত করা হয়।
  •  ঈমানের স্বাদ আস্বাদন বা অনুভব করা যায়।
  •  আল্লাহর ভালোবাসা অর্জিত হয়।
  • বিচক্ষণতা ও বিশ্বাস বৃদ্ধি পায়। ঈমান দূঢ় হয়।
  • দুশ্চিন্তা ও পেরেশানি দূর হয়। শান্তি আর্জিত হয়।
  •  আল্লাহ বেকারত্ব  দূর করে দেন।
  •  আল্লাহ তা’আলার নৈকট্য অর্জিত হয়। তার তাওবার বা ইস্তিগফারের কারণে আল্লাহ খুশি হন।
  •  মৃত্যুর সময় ফেরেস্তারা তার জন্য সুসংবাদ নিয়ে আসে। সুবহানাল্লাহ।
  •  ইস্তাগফারকারী হাশরের ময়দানে প্রচন্ড উত্তাপে আল্লাহর আরশের ছায়াতলে থাকবে।
  • মন্দ কজ থেকে বেঁচে থাকা সহজ হয়ে যায়।
  • ফেরেশতাগণও তার জন্য দু’আ করেন।

ইস্তেগফার বা আস্তাগফিরুল্লাহর ফজিলত।

ইস্তেগফার বা আস্তাগফিরুল্লাহ এর অনেক ফজিলত রয়েছে। কুরআন মাজিদে ও হাদিস শরীফে অনেক ফজিলতের কথা বলা হয়েছে। আমরা ইস্তেগফার  বা আস্তাগফিরুল্লাহর কয়েকটি ফজিলত নিচে উল্লেখ করছি।

  • আল্লাহর রহমত লাভ হয়।
  • রিজিক বৃদ্ধি পায়।
  • আকাশ থেকে বৃষ্টি অবতীর্ণ হয়।
  • গোনাহ মাফ হয়।

নামাজের পর ইস্তেগফার কেন পড়তে হয়? নামাজের পর আমরা ইস্তেগফার বা আস্তাগফিরুল্লাহ বলে থাকি। আস্তাগফিরুল্লাহ কেন বলা হয়? আমাদের মনে প্রশ্ন আসে।  চলুন এর সঠিক উত্তর জেনে নেই।

  • রাসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন নামাজের সালাম ফেরাতেন, তখন সর্ব প্রথম যে শব্দ তাঁর পবিত্র জবান থেকে বেরত হতো, তাহলো- আস্তাগফিরুল্লাহ, আস্তাগফিরুল্লাহ, আস্তাগফিরুল্লাহ।
  • তাই আমরাও রাসুলের দেখানো পথ অনুসরণ করে তিন বার আস্তাগফিরুল্লাহ বলি।
  • আমরা আস্তাগফিরুল্লাহ এজন্য বলি যে – আমরা যেভাবে নামাজ আদায় করার কথা ছিল, আমরা সেভাবে আদায় করতে পারি না। আমরা দুর্বল।  নামাজের হক আদায় করতে পারনি।  সেজন্য আস্তাগফিরুল্লাহ  বলা হয়।

আমাদের উচিত সব সময় ইস্তেগফার করা।

মাহফুজুর রহমান

মাহফুজুর রহমান হলেন স্কলার্সমীর প্রতিষ্ঠাতা, তিনি প্রফেশনালি ওয়েব ডেভেলপমেন্ট এবং SEO (Search Engine Optimization) বিষয়ে কাজ করেন, SEO Friendly নিউজ এবং ব্লগ পোস্টে দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে কাজ করে আসতেছে। যেকোনো প্রয়োজনে যোগাযোগ করার জন্য কন্টাক্ট করতে পারেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button