ই-পাসপোর্ট ফরম পূরণের নির্দেশাবলী এবং ই পাসপোর্ট এর প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সম্পর্কে বিস্তারিত

ই-পাসপোর্ট বর্তমানে বাংলাদেশের সব জায়গায় দেওয়া হচ্ছে, বাংলাদেশ বিশ্বের ১১৯ তম দেশ হিসেবে ই-পাসপোর্ট ব্যবহার হচ্ছে আর দক্ষিণ এশিয়ার প্রথমদেশ হিসেবে ই-পাসপোর্ট চালু হয়েছে। বাংলাদেশে ই-পাসপোর্ট চালু হওয়ায় বাংলাদেশর সকল নাগরিকরা অনেক ধরনের সুযোগ সুবিধা পাবেন ই-পাসপোর্টের মাধ্যমে। এই পোস্টে ই-পাসপোর্ট সম্পর্কে অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য এবং epassport ফরম পূরণের সকল নির্দেশাবলী সম্পর্কে বিস্তারিত অবগত করার চেষ্টা করব:

ই-পাসপোর্ট কি?

ই-পাসপোর্ট এবং এমআরপি পাসপোর্টের মধ্যে পার্থক্য অনেক, যদিও বা একই রয়েছে।এমআরপি পাসপোর্ট এর মধ্যে প্রথমে দুই পাতার মধ্যে যে তথ্য থাকতো ই-পাসপোর্টের মধ্যে সে তথ্য এখন আর নেই। ই-পাসপোর্ট এর মধ্যে এখন রয়েছে পালিমানের দিয়ে তৈরি একটি কার্ড এবং অ্যান্টেনা। এই কার্ডের ভিতরে একটি  চিপ রয়েছে। এবং পাসপোর্টের চিপের মধ্যে সংরক্ষিত রয়েছে পাসপোর্ট বাহকের সকল তথ্য।

ই-পাসপোর্ট এর ডাটাবেজের মধ্যে রয়েছে পাসপোর্টধারীর তিন ধরনের ছবি, এবং আঙ্গুলের ছাপ ও চোখের আইরিশ থাকবে। এর ফলে ভ্রমণকারীর সকল পাসপোর্টের তথ্য অনেক সহজেই জানতে পারবে কর্তৃপক্ষ।

ই-পাসপোর্ট চেক করার নিয়ম বিস্তারিত

ই-পাসপোর্ট ফরম পূরণের নির্দেশাবলী ২০২৩:

  1.  ই-পাসপোর্টের আবেদনপত্র অনলাইনে পূরণ করা যাবে।
  2.  বর্তমানে ই-পাসপোর্ট আবেদনের জন্য কোন কাগজপত্র সত্যায়ন করার প্রয়োজন হবে না।
  3. এখন থেকে ই-পাসপোর্ট ফরমের মধ্যে আপনার কোন ছবি দেওয়ার প্রয়োজন হবে না এবং তা সত্যায়নের করার ও প্রয়োজন হবে না।
  4. আপনার জাতীয় ‍পরিচয়পত্র (ভোটার আইডি কার্ড) যদি জাতীয় পরিচয়পত্র না থাকে তাহলে অনলাইন জন্ম নিবন্ধন সনদ অনুযায়ী অনলাইনে আবেদন পত্র পূরণ করতে হবে।
  5. ১৮ বছরের কম বা শিশু আবেদনকারীর যার জাতীয় পরিচয়পত্র (ভোটার আইডি কার্ড) নাই, তাদের জন্য তাদের পিতা অথবা মাতার জাতীয় পরিচয়পত্র (NID) নম্বর অবশ্যই উল্লেখ করতে হবে।

6.  জাতীয় ‍পরিচয়পত্র (NID) অথবা অনলাইন জন্ম নিবন্ধন (BRC) সনদ নম্নোক্ত বয়স অনুসারে দাখিল করতে হবে-

  • (ক) যদি ১৮ বছরের কম হলে অনলাইন জন্ম নিবন্ধন সনদ।
  • (খ) যদি ১৮ থেকে ২০ বছরের হয় জাতীয় তাহলে ‍পরিচয়পত্র (ভোটার আইডি কার্ড) অথবা অনলাইন জন্ম নিবন্ধন সনদ।
  • (গ) যদি ২০ বছরের উপর হলে জাতীয় ‍পরিচয়পত্র (ভোটার আইডি কার্ড) আবশ্যক । আর বিদেশস্থ বাংলাদেশ মিশন হতে আবেদনকারী হলে এ ক্ষেত্রে অনলাইন জন্ম নিবন্ধন সনদ গ্রহণযোগ্য হবে।

7. তারকা চিহ্নিত ক্রমিক নম্বরগুলো অবশ্যই পূরণীয়।

8. দত্তক/অভিভাবকত্ব গ্রহণের ক্ষেত্রে পাসপোর্টের আবেদনের সাথে সুরক্ষা সেবা বিভাগ, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় হতে জারিকৃত আদেশ দাখিল করতে হবে।

ই-পাসপোর্ট করতে কত টাকা লাগে ২০২৩?

9.  অনলাইনে আবেদন করার পর আবেদন পত্র আপনার বর্তমান ঠিকানা সংশ্লিষ্ঠ বিভাগীয় পাসপোর্ট ভিসা অফিস অথবা আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস/বিদেশস্থ বাংলাদেশ মিশনে দাখিল করতে হবে।

10. যদি ১৮ বছরের নিচে হয় এবং ৬৫ বছরের ‍উর্ধ্বে হয় সকল আবেদনে ই-পাসপোর্টের মেয়াদ হবে ০৫ বছর এবং পাসপোর্ট হবে ৪৮ পৃষ্ঠার।

11. প্রাসঙ্গিক টেকনিক্যাল সনদসমূহ (যেমন: ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, ড্রাইভার ইত্যাদি) আপলোড/সংযোজন করতে হবে।

12. প্রযোজ্য ক্ষেত্রে প্রাসঙ্গিক জিও (GO)/এনওসি (NOC)/ প্রত্যয়নপত্র/ অবসরোত্তর ছুটির আদেশ (PRL Order)/ পেনশন বই আপলোড/সংযোজন করতে হবে যা ইস্যুকারী কর্তৃপক্ষের নিজ নিজ Website এ আপলোড থাকতে হবে।

13. প্রযোজ্য ক্ষেত্রে বিবাহ সনদ/নিকাহনামা এবং বিবাহ বিচ্ছেদের ক্ষেত্রে তালাকনামা দাখিল করতে হবে।

14. দেশের অভ্যন্তরে আবেদনের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য ফি এর উপর নির্ধারিত হারে ভ্যাট (VAT) সহ অন্যান্য চার্জ (যদি থাকে) অতিরিক্ত হিসাবে প্রদেয় হবে। বিদেশে আবেদনের ক্ষেত্রেও সরকার কর্তৃক নির্ধারিত ফি প্রদেয় হবে।

15. কূটনৈতিক পাসপোর্টের জন্য পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কনস্যুলার ও ওয়েলফেয়ার উইং (Consular and Welfare Wing) অথবা ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয় বরাবর আবেদনপত্র দাখিল করতে হবে।

16.  বৈদেশিক মিশন হতে নতুন পাসপোর্টের জন্য আবেদন করা হলে স্থায়ী ঠিকানার কলামে বাংলাদেশের যোগাযোগের ঠিকানা উল্লেখ করতে হবে।

17.  অতি জরুরী পাসপোর্টের আবেদনের ক্ষেত্রে (নতুন ইস্যু) নিজ উদ্যোগে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সনদ সংগ্রহ পূর্বক আবশ্যিকভাবে আবেদনের সাথে দাখিল করতে হবে।

18. (ক) দেশের অভ্যন্তরে অতি জরুরী পাসপোর্ট প্রাপ্তির লক্ষ্যে আবেদনের সাথে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স দাখিল করা হলে অন্যান্য সকল তথ্য সঠিক থাকা সাপেক্ষে ২ কর্মদিবসের মধ্যে পাসপোর্ট প্রদান করা হবে।

  • (খ) বাংলাদেশর অবস্থানরত জরুরী পাসপোর্ট প্রাপ্তির/ আর্জেন্ট পাসপোর্ট প্রাপ্তির জন্য আবেদনের সাথে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স দাখিল করা হলে অন্যান্য সকল তথ্য সঠিক থাকা সাপেক্ষে ৭ কর্মদিবসের ভিতরে পাসপোর্ট প্রদান করা হবে।
  • (গ) দেশের অভ্যন্তরে রেগুলার পাসপোর্ট প্রাপ্তির লক্ষ্যে আবেদনের সাথে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স দাখিল করা হলে অন্যান্য সকল তথ্য সঠিক থাকা সাপেক্ষে ১৫ কর্মদিবসের মধ্যে পাসপোর্ট প্রদান করা হবে।

19.  আবেদনের সময় মূল জাতীয় ‍পরিচয়পত্র (NID), অনলাইন জন্ম নিবন্ধন (BRC) এবং প্রযোজ্য ক্ষেত্রে টেকনিক্যাল সনদ, সরকারি আদেশ (GO)/অনাপত্তি (NOC) প্রদর্শন/দাখিল করতে হবে।

20. পাসপোর্ট সংশোধন বা পাসপোর্ট রি-ইস্যুর জন্য মূল পাসপোর্ট থাকতে হবে।

21.  পাসপোর্ট হারিয়ে গেলে, হারানো পাসপোর্টের ক্ষেত্রে মূল জিডির কপি প্রদর্শন/দাখিল করতে হবে।

22. ৬ বছর বয়সের নিম্নের আবেদনের ক্ষেত্রে ৩ আর (3R Size) সাইজের ( ল্যাব প্রিন্ট গ্রে ব্যাকগ্রউন্ড ) ছবি দাখিল করতে হবে।

23.  পাসপোর্ট হারিয়ে গেলে অথবা চুরি হলে দ্রুত নিকটস্থ থানায় জানাতে হবে। নতুন পাসপোর্টের ক্ষেত্রে পুরাতন পাসপোর্টের ফটোকপি, জিডি কপিসহ আবেদন দাখিল করতে হবে ।

পাসপোর্ট সংশোধন করার নিয়ম বিস্তারিত

এই পোস্টের সকল তথ্য সূত্রঃ বহিরাগমন শাখা ১ , সুরক্ষা সেবা বিভাগ বাংলাদেশ , স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়স্মারক নং ৫৮.০০.০০০০.০৪০.০১.০০৩.১৬-১২৩৪

Post information credit From: www.epassport.gov.bd

Share This Article
মাহফুজুর রহমান হলেন স্কলার্সমীর প্রতিষ্ঠাতা, তিনি প্রফেশনালি ওয়েব ডেভেলপমেন্ট এবং SEO (Search Engine Optimization) বিষয়ে কাজ করেন, SEO Friendly নিউজ এবং ব্লগ পোস্টে দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে কাজ করে আসতেছে। যেকোনো প্রয়োজনে যোগাযোগ করার জন্য কন্টাক্ট করতে পারেন।
Exit mobile version