বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ রচনাঃ যতদিন রবে পদ্মা, মেঘনা যমুনা বহমান ততদিন রবে কীর্তি তোমার শেখ মুজিবুর রহমান। আজকে আপনাদের কাছে বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ রচনাটি শেয়ার করব।
বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ রচনাটি এই পোস্টটিতে লেখার সময় বিশেষ করে বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের প্রতি লক্ষ্যে করে লেখা হয়েছে যাতে করে কম শব্দের মধ্যে রচনার সবদিক ফুটে উঠে এবং বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ রচনার সকল পয়েন্টের প্রতিও লক্ষ্য করে লেখা তাই কমপ্লিট রচনাটি পড়লে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সব বিষয় সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন। এবং এই একিই রচনা দ্বারা বঙ্গবন্ধু ও স্বাধীনতা রচনাটিই ও লেখত পারবেন যেকোনো পরিক্ষায়।
বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ রচনার ভূমিকাঃ পৃথিবী সৃষ্টিলগ্নে বিভিন্ন জাতির আবির্ভাব।এসব জাতির মধ্যে কিছু মহান পুরুষ ছিলেন তাঁদের মধ্যে অন্যতম বিশ্বসমম্মোহনী শক্তির অধিকারী ছিলেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।
শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম ও পরিচয়ঃ
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯২০ সালের ১৭ মার্চ বর্তমান গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গিপাড়ায় জন্ম গ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম শেখ লুৎফর রহমান মাতার নাম সায়রা খাতুন। দুই ভাই ও তিন বোনের মধ্যে তিনি ছিলেন তৃতীয়। তাদের ছিল একটি সুখের নীড়।
বঙ্গবন্ধুর শিক্ষা জীবন
বঙ্গবন্ধুর শিক্ষা জীবনঃ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বয়স যখন ৭ বছর তখন ১৯২৭ সালে তাঁকে স্থানীয় গিমাডাঙ্ঘা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি করা হয়। তারপর ৯ বছর বয়সে,
১৯২৯ সালে গোপালগঞ্জ পাবলিক স্কুলে ভর্তি করা হয়।১৯৪২ সালে এসএসসি পাস করেন ১৯৪৪ সালে এইচএসসি ও ১৯৪৭ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বি,এ পাস করেন।১৯৪৮ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন বিভাগে ভর্তি হন।
বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক জীবন
বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক জীবনঃ ” হে বন্ধু বঙ্গবন্ধু তোমার কালো চশমাটা আমায় দাও,আমি চোখ দিয়ে দেখব তুমি কেমন করে দেশটাকে এত ভলোবাস।”
১৯৩৯ সালে মিশনারি স্কুল এ পড়ার সময় তার রাজনৈতিক জীবন শুরু হয়। রাজনৈতিক জীবন শুরু করার আগেই গ্ৰামের হতদরিদ্র মানুষের দুঃখ দেখে নিজের মনের মধ্যে এক ধরনের কষ্ট অনুভব করতেন।যাদের ঘরে খাবার নেই তাকে তার নিজের মুখের খাবার তুলে দিয়েছেন। তিনি ন্যায়ের পক্ষে কাজ করতেন অন্যায়কারী যতবড় শক্তিশালী হোক না কেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তার প্রতিবাদ করতেন।
ছাত্রাবস্থায় জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর রাজনৈতিক জীবন শুরু হয়েছে। তাঁর রাজনৈতিক জীবনের বিশেষ বিশেষ অবদান রয়েছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জীবনী সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন শেখ মুজিবুর রহমান জীবনী
ভাষা আন্দোলন
ভাষা আন্দোলনঃ ১৯৪৮ সালের ২৩ শে ফ্রেব্রুয়ারি প্রধানমন্ত্রী খাজা নাজিমুদ্দিন আইন পরিষদ এ পূর্ব পাকিস্তানের জনগণ উর্দুকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে মেনে নেবে বলে ঘোষণা দিলে, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তা্ৎক্ষনিকভাবে এই ঘোষণার প্রতিবাদ করেন এবং ,২ রা মার্চ ফজলুল হক মুসলিম হলে এক বৈঠকে ” সর্বদলীয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ গড়ে তোলেন । ১১ মার্চ হরতাল চলাকালে তিনি গ্ৰেপতার হন। ১৯৫২ সালে ২৬ জানুয়ারি খাজা নাজিমুদ্দিন আবার ও ঘোষণা করেন পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা হবে উর্দু ।বন্দি থাকা অবস্থায় এই ঘোষণার প্রতিবাদ করেন এবং ২১ ফেব্রুয়ারিকে রাজবন্দীদের মুক্তি এবং বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবি দিবস হিসেবে পালন করার জন্য জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদের প্রতি আহ্বান জানান ১৪৪ ধারা ভেঙে ঢাকার রাজপথে ২১ ফেব্রুয়ারির মিছিল বের করলে ওই মিছিলে পুলিশ গুলি চালায়। ফলে শহীদ হন সালাম রফিক জব্বার,বরকত সহ আরো অনেকে। বঙ্গবন্ধু জেলে বসে এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানান।১৩ দিন অনশন অব্যাহত রাখেন ।২৬ ফেব্রুয়ারি জেলখানা থেকে তিনি মুক্তি লাভ করেন।
মুক্তিযুদ্ধের ছয়দফা দাবি
ছয়দফা দাবিঃ ১৯৬৬ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি লাহোর সম্মেলনে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাঙালী জাতির মুক্তির সনধ ৬ দফা পেশ করেন।একে ম্যাগনেকার্টা বলা হয়।এই দাবি পেশকে কেন্দ করে তিনি বারো বার গ্ৰেফতার হন।
আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা
আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলাঃ পাকিস্তান সরকার ১৯৬৮ সালের ৩ জানুয়ারি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে প্রধান আসামি করে মোট ৩৫ জনের বিরুদ্ধে আগরতলা মামলা দায়ের করেন।
কেন্দ্রীয় সংগ্রাম পরিষদ গঠনঃ ১৯৬৯ সালের ৫ জানুয়ারি ৬ দফাসহ ১১ দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে কেন্দ্রীয় সংগ্রাম পরিষদ গঠিত হয় এবং বঙ্গবন্ধুর মুক্তির দাবিতে দেশব্যাপী ছাত্র আন্দোলন শুরু হয়।
ছাত্র আন্দোলন শুরু করার পর এ আন্দোলন গন আভুথ্যানে রুপ নেয়, বঙ্গবন্ধু সহ অন্যান্য আসামিকে বিনা শর্তে মুক্তি দিতে বাধ্য হয় পাকিস্তান সরকার।২৩ ফেব্রুয়ারি ঐতিহাসিক রেসকোর্স ময়দানে কেন্দ্রীয় সংগ্ৰাম পরিষদ আয়োজিত এক সংবর্ধনা সভায় জাতীর জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে” বঙ্গবন্ধু” উপাধিতে ভূষিত করা হয়।
বাংলাদেশ নামকরণ
বাংলাদেশ নামকরণ: সোহরাওয়ার্দী মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আওয়ামী লীগের আলোচনা সভায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পূর্ব বাংলার নামকরণ করেন বাংলাদেশ
১৯৭১ সালের নির্বাচনী বিজয়ঃ
১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচনে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ পূর্ব বাংলার জাতীয় পরিষদের ১৬২ টি এলাকাভিত্তিক আসনে ১৬০ টিতে জয় লাভ করে।৭ টি মহিলা আসন সহ আওয়ামী লীগের ভোট আসন ১৬৭ টি।
১৯৭১ সালের ৭ মার্চ রেসকোর্সের ভাষনঃ
১৯৭১ সালে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেলে ও পাকিস্তান সরকার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে নানা মুখী তালবাহানার আশ্রয় নেয়। স্বাধীনতার দিকনির্দেশনা হিসেবে এক ঐতিহাসিক ভাষণ দেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ রেসকোর্সের ময়দানে জনতার মহাসমুদ্রে দাঁড়িয়ে ব্রজকন্টে আওয়াজ তোলেন
“এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম আমাদের স্বাধীনতার সংগ্রাম” জয় বাংলা,
মাত্র ১৮ মিনিটের মানে অসহযোগর বাক ও দেন। এ অসহযোগ আন্দোলন তীব্র থেকে তীব্রতর হতে থাকে।২৫ শে মার্চ দিবাগত রাতে পাকিস্তানি সেনাদের আতর্কিত হামলা নীরিহ বাঙ্গালীর উপর পড়ে এই আগ্ৰাসি আক্রমণ ” অপারেশন সার্চ লাইট'” নামে পরিচিত । তাদের এ আক্রমন লক্ষ্য বস্তুতে পরিণত হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় , পিলখানা, রাজাবাগ পুলিশ সদরদপ্তর। এমতাবস্থায় রাত ১২ টা২০ মিনিটে অর্থাৎ ২৬ শে মার্চের প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন।এ ঘোষণার পর রাত ১ টা৩০ মিনিট এ নিজ বাসভবন থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে গ্রেফতার করা হয়। শুরু হয় যুদ্ধ মুক্তি সংগ্রাম, যুদ্ধ চলে সুদীর্ঘ নয় মাস , লাখ ও শহীদ এবং হাজার হাজার মা বোনদের ইজ্জত এর বিনিময়ে অর্জিত হয় আমাদের স্বাধীনতা যা১৬ ই ডিসেম্বর মুক্তি যুদ্ধের অর্জিত বিজয় দিবস। জাতির জনক শেখ মুজিবুর রহমান হন বাংলাদেশের স্থপতি।
বঙ্গবন্ধুর জাতি গঠনে অন্যতম অবদানসমূহ্ঃ
বাংলাদেশ গঠনে সহায়ক অন্যতম অবদান রাখতে সক্ষম ব্যক্তি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলার দায়িত্ববার গ্ৰহন করার পর ১,৬৫০০০ প্রাথমিক শিক্ষকের চাকরি সরকারিকরণ করেন এবং রেশনের ব্যবস্তা করেন।বিনিমূলে্ৎ ৫ম শ্রেনী পর্যন্ত বই খাতা পোশাক প্রদানের ব্যবস্থা করেন। গৃহহীনদের গৃহের ব্যবস্তা , শিল্পকলা তৈরি, বাংলাদেশকে একটি উওম সংবিধান উপহার দেওয়া সহ ইত্যাদি বিভিন্ন অবদান রেখেছেন তা লিখে শেষ করা যাবে না।
মুক্তিযুদ্ধের ভয়াল কালোরাতঃ
১৫ ই আগষ্ঠ সেই ভয়াবহ ভয়াল কালোরাত। রাতের নীরবতা মসজিদ এ ফজরের আজান ধ্বনিত হচ্ছে বাংলাদেশে সেনাবাহিনীর বিপথগামী একটি অংশ তখন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর ৩২ নম্বর রোডের বাড়িতে গিয়ে এক জঘন্যতম হত্যা কান্ড চালায়,নিংশেষ করে দেয় স্বপরিবারকে। বেঁচে থাকেন কেবল মাত্র দুই বোন। আমাদের প্রিয় দেশ নেত্রী শেখ হাসিনা, ও তার বোন শেখ রেহানা।
বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ রচনার উপসংহারঃ
” দীপ্ত শপথ মুজিব বর্শে আমারা যাবো সবার শীর্ষে” পরিশেষে একথা বলা যায় জাতির জনক শেখ মুজিবুর রহমানের আত্মার শান্তির মাগফিরাত এ দেশের মানুষ চিরদিন করবে এবং তার প্রতি শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা আব্যাহত রাখবে।
কন্টে কন্টে বলি,” ভেঙ্গেছে দুয়ার এসেছে জোর্তিময় মুজিব তোমার জয় হোক”