পরিচিতিঃ Bangladesh University of Engineering and Technology বুয়েট বা বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় শুধু বাংলাদেশের অন্যতম সেরা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় নয় বরং দেশের অন্যতম সেরা বিশ্ববিদ্যালয়।
BUET Global Ranking
আন্তজার্তিক র্যাংকিং “কিউএস ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি র্যাংকিংস ২০২১ “ এ বুয়েটের অবস্থান ৮০১ তম যা দেশ সেরা। ৮৩.৯ একর জায়গা জুড়ে ঢাকা শহরের কেন্দ্রস্থল পলাশী তে অবস্থান এই প্রতিষ্ঠানের।
BUET এর ইতিহাসঃ
বুয়েট বাংলাদেশের পুরাতন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মধ্যে অন্যতম।ঢাকা সার্ভে স্কুল হিসেবে ১৮৭৬ সালে যাত্রা শুরু করে যা পরে আহসানউল্লাহ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে রুপান্তরিত করা হয়।প্রথমে ডিপ্লোমা ৩ বছর মেয়াদী কোর্স দেওয়া হয় এবং এটি ছিল ঢাকা কলেজের সাথে সংযুক্ত। দেশবিভাগের পর পুব–পাকিস্তান সরকার অনুমোদন দিলে ৪ বছর মেয়াদী কোর্স চালু হয়। এর ফলে পুরকৌশল, তড়িৎ প্রকৌশল, যন্ত্র প্রকৌশল, কেমিকৌশল, কৃষি প্রকৌশল ও টেক্সটাইল প্রকৌশল বিভাগে চার বছর মেয়াদী ব্যাচেলর ডিগ্রি প্রদান করা শুরু হয়।১৯৫৭ সালে এর আসন সংখ্যা বাড়ানো হয় এবং ১৯৫৮ সালে ডিপ্লোমা কোর্স বন্ধ করা হয়।
এরপর পাকিস্তান আমলে ১৯৬২ সালের ১ জুন এটিকে প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিণত করা হয়। এর নামকরণ করা হয় East Pakistan University of Engineering & Technology (EPUET). সেই সময় ৩ টি আবাসিক হল স্থাপন সহ, আসন সংখ্যা বাড়ানো এছাড়া স্থাপত্য ও নগর পরিকল্পনা বিভাগ খোলা হয়। এরপর পুর,তড়িৎ,ধাতিব,কেমি, যন্ত্র, স্থাপত্য ও নগর পরিকল্পনা নিয়ে যাত্রা শুরু করে।
মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী স্বাধীন বাংলা গঠিত হলে নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় বুয়েট।
All about Khulna University of engineering and technology
BUET শিক্ষক, শিক্ষার্থী সংখ্যা:
বুয়েটে বর্তমানে প্রায় ১০ হাজার শিক্ষার্থী অধ্যয়নরত। এছাড়া ৬০০ জনের অধিক শিক্ষয়তনিক ব্যক্তিবর্গ রয়েছে। বর্তমান উপাচার্য সত্য প্রসাদ মজুমদার ও আচার্য রাস্ট্রপতি আব্দুল হামিদ।
ক্যাম্পাসঃ
ঢাকার প্রানকেন্দ্র পলাশীতে অবস্থিত বুয়েট ক্যাম্পাস। মাত্র ৮৩.৯ একর জায়গা জুড়ে বুয়েট ক্যাম্পাসের একাডেমিক ভবন ও হল গুলো খুব কাছাকাছি অবস্থিত। ক্যাম্পাসে ক্যাফেটেরিয়া,মসজিদ রয়েছে। এছাড়া আধুনিক ল্যাব,ক্লাস রুম ও গবেষণাগার রয়েছে। রয়েছে আধুনিক সুবিধা সম্পন্ন শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ১০৩৬ আসনের মিলনায়তন, লাইব্রেরি, ব্যায়ামাগার,ভার্চুয়াল ক্লাসরুম।
All About Bangladesh University of Business and Technology
বুয়েট অনুষদ/বিভাগঃ
বুয়েটে ১৮ টি বিভাগ রয়েছে ৫ টি অনুষদের তত্বাবধানে।
স্থাপত্য এবং পরিকল্পনা অনুষদ
- স্থাপত্য বিভাগ
- নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগ
- মানবিক বিভাগ
পুরকৌশল অনুষদ
- পুরকৌশল বিভাগ
- পানি সম্পদ কৌশল বিভাগ
তড়িৎ এবং ইলেকট্রনিক কৌশল অনুষদ
- তড়িৎ এবং ইলেকট্রনিক কৌশল বিভাগ
- কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগ
- জৈব চিকিৎসা কৌশল বিভাগ
প্রকৌশল অনুষদ
- কেমিকৌশল বিভাগ
- বস্তু ও ধাতব কৌশল বিভাগ
- রসায়ন বিভাগ
- গণিত বিভাগ
- পদার্থবিজ্ঞান বিভাগ
- পেট্রোলিয়াম ও খনিজ সম্পদ কৌশল বিভাগ
যন্ত্র কৌশল অনুষদ
- যন্ত্রকৌশল বিভাগ
- নৌযান ও নৌযন্ত্র কৌশল বিভাগ
- শিল্প ও উৎপাদন কৌশল বিভাগ
ইইন্সটিটিউটঃ
বুয়েটে ৪ টি ইন্সটিটিউট রয়েছে।
- তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি ইন্সটিটিউট
- পানি ও বন্যা ব্যবস্থাপনা ইনস্টিটিউট
- এপ্রোপ্রিয়েট টেকনোলজি ইনস্টিটিউট
- দুর্ঘটনা গবেষণা ইন্সটিটিউট
একাডেমিক ক্যালেন্ডারঃ
বুয়েটে সাধারনত দুই সেমিস্টার নিয়ে একটি বর্ষ গণনা করা হয়। মিড টার্ম ও ফাইনাল টার্ম পরীক্ষা হয়ে থাকে। স্নাতক ৪ বছর মেয়াদী এবং এই ৪ বছরে মোট ৮ টি সম্পন্ন সেমিস্টার করতে হয়।এছাড়া প্রতি শুক্রবার ও শনিবার সাপ্তাহিক ছুটি।
বুয়েট আবেদন যোগ্যতা ও ভর্তি পরীক্ষাঃ
বুয়েট ভর্তি পরীক্ষা এইচ এস সি ফলাফল প্রকাশের পর ই হয়ে থাকে। দুইটি বিভাগে বিভক্ত করে পরীক্ষা নেওয়া হয়। ‘ক‘ গ্রুপ প্রকৌশল বিভাগ আর ‘খ’ গ্রুপ প্রকৌশল ও স্থাপত্য বিভাগ এর জন্যে পরীক্ষা নেওয়া হয়। তার আগে আবেদনকৃত থেকে বাছাই করে প্রাথমিক তালিকা প্রকাশ করা হয়।
আবেদন যোগ্যতাঃ
বুয়েট এ আবেদনের যোগ্যতা হিসেবে এইস এস সি, এস এস সি তে নুন্যতম জিপিএ ৪ থাকলেই আর পদার্থ, রসায়ন, গনিতে জিপিএ ৫ ও ইংরেজিতে জিপিএ ৪ থাকলেই আবেদন করা যাবে। তবে এটি অস্থায়ী, বুয়েট কর্তৃপক্ষ সার্কুলারের মাধ্যমে বিস্তারিত জানিয়ে দেয়।যা বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েব সাইটে দেওয়া থাকে।
পরীক্ষা পদ্ধতিঃ
বুয়েটে ৬০০ নম্বরের লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয় পদার্থ, রসায়ন ও গণিতের ক ও খ গ্রুপের। ৩ ঘন্টা সময়ে প্রতিটি বিষয়ে ২০ টি করে ৬০ টি প্রশ্ন থাকে।এছাড়া খ গ্রুপের চিত্রাংকন করতে হয় আলাদা, যেখানে ৪০০ নম্বরের মুক্ত হস্ত অংকন থাকে।
আবাসিক হলঃ
বুয়েটে ৮ টি হল রয়েছে ।যার মধ্যে ১ টি ছাত্রী হল। বুয়েটের আবাসিক হলের নিমানশৈলী দৃষ্টিনন্দন।
আবাসিক হলের ১ টি স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থী ও তরুন শিক্ষকদের জন্যে সিট বরাদ্দ হয়ে থাকে।
Top 10 UK Scholarships without IELTS
সংগঠন সমূহঃ
বুয়েটে বিভিন্ন সংগঠন রয়েছে।
বুয়েটের র্যাগ অনুষ্ঠান বিশ্ববিদ্যালয়ের সবচেয়ে বড় অনুষ্ঠানে হয়ে থাকে। এছাড়া নববর্ষ, ইইই ডে, মেকানিকাল ডে ছাড়াও বিভাগ ভিত্তিক ডে গুলো বড় আকর্ষণ।
বুয়েটের সংগঠন গুলো সত্যেন বোস বিজ্ঞান ক্লাব, বুয়েট নিউক্লিয়ার ইঞ্জিনিয়ারিং ক্লাব
বুয়েট অটোমোবাইল ক্লাব, বুয়েট এনার্জি ক্লাব,বুয়েট রোবোটিক্স সোসাইটি, বুয়েট ড্রামা সোসাইটি,মূর্ছনা,ওরেগ্যামি ক্লাব,আলোকবর্তিকা-বুয়েট,বুয়েট সাহিত্য সংসদ, বুয়েট ক্যারিয়ার ক্লাব,বুয়েট ডিবেটিং সোসাইটি।
স্থাপত্যসমুহঃ
বুয়েটের ছোট ক্যাম্পাসে রয়েছে শহীদ মিনার, সনি স্মরণে ভাস্কর্য, আবু রায়হান দীপ স্মরনে স্মৃতিফলক।