১৬ ই ডিসেম্বর ১৯৭১ এর ইতিহাস: ১৬ ই ডিসেম্বর ১৯৭১ এর ইতিহাস ভাষায় বর্ণনা করলে তা শেষ হবেনা ।১৬ ই ডিসেম্বর আমাদের বিজয় দিবস ।এই বিজয় দিবস আমাদের গৌরব আমাদের অহংকার । জাতীয় জীবনকে স্বাধীন জীবন দানের প্রতীক।
” শুধু ভিক্ষা করে কখনো স্বাধীনতা লাভ করা যায়না।
স্বাধীনতা অর্জন করতে হয় শক্তি দিয়ে ,সংগ্ৰাম করে
স্বাধীনতার মূল্য দিতে হয় রক্ত দিয়ে”
নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসুর এই উক্তির মধ্যে দিয়ে বুঝা যায় কিভাবে আমাদের এই বিজয়ের দেখা পেলাম এই স্বাধীন সার্বভৌম দেশ পেলাম।
১৬ ই ডিসেম্বর ১৯৭১ এর ইতিহাস কাগজে কলমে কি লিখে শেষ হবে না কখনো শেষ হবেনা ।
মায়ের এই আঁচলে কত যে মধুর ভালবাসা তার রক্ষার জন্য এই দেশকে স্বাধীন ও সার্বভৌম হিসেবে গড়ে তুলার জন্য বাংলার দামাল ছেলেরা যে ইতিহাস গড়ে তুলেছিলেন এনেছিলেন যে বিজয় সেই বিজয় আমাদেরকে স্বাধীনভাবে চলতে শিখেছে।
বিজয়ের ইতিহাস:
একসময় পুরো ভারতবর্ষ শাসন করত ভারত তথা ইংরেজরা। ১৯৪৭ সালে উপমহাদেশে ব্রিটিশ শাসনের অবসান ঘটে এবং ভারত ও পাকিস্তান নামে দুটি স্বাধীন রাষ্ট্রের জন্ম হয়। পাকিস্তান রাষ্ট্রের ছিল দুটি অংশ। একদিকে পূর্ব- পাকিস্তানে অন্য দিকে পশ্চিম পাকিস্তান। স্বাধীনতার পরপরই পাকিস্তানের কুচক্রী শাসক গোষ্ঠী নানাভাবে পূর্ব বাংলাকে শাসন ও শোষণ করার ষড়যন্ত্র শুরু করে । রাজনীতি ,চাকরি,ব্যবসায়- বানিজ্য ,অর্থ – সম্পদ,বিলি – বাটোয়ারা সব ক্ষেত্রেই তারা পূর্ব বাংলাকে ঠকাতে শুরু করে ।এরই প্রেক্ষাপটে ১৯৫২ সালে ভাষা আন্দোলন হয়। রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবিতে শহীদ হন সালাম, বরকত, জব্বার ,রফিক সহ অনেকে। এদিকে বাংলার মা বোনেরা হারাতে হয় তাদের সম্ভ্রব ,কত মায়ের বুক খালি হতে থাকে।এরপর শুরু হয় বাঙালির স্বাধীকার আদায়ের আন্দোলন।
- ১৯৭১ সালের ২৫ শে মার্চ রাতে পাকিস্তানি বর্বর হানাদার বাহিনী এদেশের মানুষের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। নির্বিচারে গুলি চালায় হত্যা করে হাজার হাজার মানুষ।২৫ মার্চ গভীর রাতে বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে গ্ৰেফতার করা হয় পাকিস্তানি সৈন্যদের হাতে গ্ৰেফতার হয়ার পূর্বে অর্থাৎ ২৬ মার্চ প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার ঘোষণা করেন। আহ্বান করেন বাঙালি সন্তানদের মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করার জন্য। শুরু হয় সশস্ত্র মুক্তিসংগ্রাম। দীর্ঘ নয় মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর আর কোন উপায় না পেয়ে হানাদার পাক বাহিনী ১৯৭১ সালের ১৬ ই ডিসেম্বর মুক্তিবাহিনী ও মিত্রবাহিনীর কাছে নিংশার্ত ভাবে আত্মসমর্পণ করে।
১৯৭১ এর ১৬ ই ডিসেম্বর বিকেল ৫ টা ১ মিনিটে ঢাকায় রমনা রেসকোর্স ময়দানে বর্তমান সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে যৌথ কমান্ডের পক্ষে লেফটেন্যান্ট জেনারেল জগজিৎ সিং অরোরা এবং পাকিস্তানের পক্ষে লেফটেন্যান্ট জেনারেল নিয়াজী পাকিস্তানের আত্মসমর্পণ দলিলে স্বাক্ষর করেন।
১৯৭১ সালের ১৬ ই ডিসেম্বর অর্জিত হয় মুক্তিযুদ্ধের বিজয় ।তাই ১৬ ই ডিসেম্বর কে আমরা পালন করি বিজয় দিবস হিসাবে।
প্রতিবছর ১৬ ই ডিসেম্বর বিজয় দিবস উদযাপন করি এই দিবসটি উপলক্ষে আমরা ভোরে সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করি শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করি এবং নানা অনুষ্ঠানে মুখরিত থাকে এই দিনটি । জাতীয় ইতিহাসে এর অবদান অতুলনীয় অনস্বীকার্য।
সুতরাং এটাই বলা ,
“সালাম সালাম হাজার সালাম সকল শহীদ স্মরণে
আমার হ্নদয় রেখে যেতে চাই তাদের স্মৃতি চরনে।”
পরিশেষে বলতে চাই এ বিজয়ের স্মৃতি থাকবে গাঁথা মোদের মনে থাকবে এই বিজয় ইতিহাসের পাতায় পাতায় অম্লান চিরদিন।